বালতি নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নিয়মিত পানি না থাকায় হাতে বালতি নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার (৪ আগস্ট) তিনটার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের ছাদে প্রতিবাদ জানান তারা।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের উত্তর পাশে শেরে বাংলা হল সংলগ্ন পুকুর সংস্কারের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা অনেক আগে থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কয়েকবার পুকুরটির সংস্কারের কথা বলা হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। গত কয়েক দিন আগে শেরে বাংলা হলে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য পুকুর সংস্কারের বাস্তবায়নের কথা বলে গেছেন। এর আগেও ট্রেজারার পুকুর সংস্কারের কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবায়নের বিন্দুবিসর্গ আজও কেউ দেখেননি। একযুগ পরে এসেও কেউ কথা রাখেনি।
২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ মার্চে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগে পুকুরটি সংস্কার চেয়ে চিঠি পাঠান ওই সময়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ রাহাত হুসাইন ফয়সাল। পরে ২০২৩ সালের ৫ জুন ও ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর পুকুরটি সংস্কার চেয়ে আবেদন পাঠান বর্তমান বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আরিফ হোসেন। কিন্তু আজও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি পুকুর সংস্কারের বিষয়ে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোসাহিদ আনসারী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে দীর্ঘদিন যাবৎ পানির সমস্যা রয়েছে। গোসলের সময়সহ প্রায়ই পানি পাওয়া যায় না।আজ সকাল ১০ থেকে পানি পাওয়া যায়নি, তাই আমরা গোসল করতে ও নামাজে যেতে পারিনি।পানির সমস্যা এখন নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতেছি।
আরেক শিক্ষার্থী জানান, পানির সমস্যা সমাধানে অনেকবার পুকুর সংস্কারের দাবি উঠেছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি। তারা আমাদেরকে বারবার আশ্বস্ত করেছেন কিন্তু আজও একটি পুকুরও সংস্কার করেনি।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের পুকুর সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের এবং আমিও এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পেরেছি। পুকুর সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে কয়েকবার লিখিত চিঠি দিয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের এই নায্য দাবির সাথে আমরাও একমত। বিষয়টি নিয়ে এর আগেও মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। পানির সমস্যা সমাধানে পুকুর সংস্কার এবং সেন্ট্রাল পানির লাইন স্থাপনে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে কথা বলে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
পানির সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মোরশেদ আবেদীন বলেন, আমি গতকালকেও হলে গিয়েছিলাম, হলে ২টা করে মটর রয়েছে। এই মটর দুটি থেকে যে পরিমাণ পানি ওঠার কথা সেই পরিমানেই পানি উঠছে। এখন ঠিকমতো মটর ছাড়া কিংবা পানি ঠিকমতো বণ্টন হয় কিনা সেটা তো আমি জানি না।
এ বিষয়ে জানতে সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ সাইদুজ্জামান এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিনকে একাধিকবার ফোন করা হলে ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু হল ও শেরে বাংলা হলে প্রায় ১ হাজার ১০০ জন আবাসিক ছাত্র অবস্থান করে। হলে গোসল করা, জামা-কাপড় ধোয়া, বাথরুম করা, খাবার পানি সংগ্রহ করার জন্য দুটি সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে পানির সংকট পূরণ করা সম্ভব হয় না এবং কিছুদিন পরপর সাবমার্সিবল পাম্পে সমস্যা দেখা দেয়। পানির সমস্যা সমাধানের জন্য বঙ্গবন্ধু হলের উত্তর পাশে শেরে বাংলা হল সংলগ্ন পুকুরটি সংস্কার করার কথা বলেন শিক্ষার্থীরা। তাতে একদিকে পানির সমস্যার সমাধান হবে এবং ক্যাম্পাস সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।