০৭ জুলাই ২০১৮, ০২:৪৪

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে আমার ছেলে আন্দোলন এসেছে

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুর বাবা

‘সারাদেশের মানুষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে ছিল। আমার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স করা একজন মানুষ। তার জ্ঞান আছে, যা আমার নাও থাকতে পারে। তাই সে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে কোটা সংস্কার আন্দোলন করে। আমার ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গ্রন্থাগারের সামনে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে। সে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি গ্রামে কৃষি কাজ করি। তার চিকিৎসায় আমি টাকা দিয়েছি।’

আন্দোলনে নিজের ছেলের জড়িত হওয়া প্রসঙ্গে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের ছাত্র নুরুল হক নুরুর বাবা ইদ্রিস হাওলাদার এসব কথা বলেন।

শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিক সমাজের আয়োজনে এক সমাবেশে তিনি কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘কষ্টে আমি কথা বলতে পারছি না। আমার হৃদয় ফেটে যাচ্ছে। আমি বলতে চাই— যারা অতর্কিত হামলায় আহত হয়েছে, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করুন। আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরকে বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিন।’

তিনি বলেন আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি দেশের মা। দেশের নাগরিকরা আপনার সন্তানের মতো। সন্তানরা আপনার কাছে আবদার করতেই পারে। আপনি দেবেন কী দেবেন না, সেটা আপনার বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু আপনি নির্যাতন করতে পারেন না। আহত ছেলে-মেয়েদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চিকিৎসা করানো হোক এবং গ্রেফতার ছেলে-মেয়েদেরকে তাদের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিন।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ইদ্রিস হাওলাদার আরও বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন যৌক্তিক হলে অবলিম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করবেন। যারা কারাগারে আছে, তাদের মুক্তি দিতে অনুরোধ জানাই।’

উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে সাত দফা দাবি পেশ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম দাবি হচ্ছে- শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত, মামলা প্রত্যাহার, নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান দেওয়া, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো বন্ধ করা, আহতদের রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে থাকতে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার অনুযায়ী কোটা সংস্কার করে দ্রুততম সময়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি।