শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য মেলে না বেরোবির ওয়েবসাইটে
তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে সারা দুনিয়া এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। এ সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন না রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষাথীরা। চাহিদা অনুযায়ী তথ্য দিতে ব্যর্থ হচ্ছে ওয়েবসাইটটি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীর জন্য তথ্য জানার অন্যতম মাধ্যম brur.ac.bd ওয়েবসাইট। তবে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য আপডেট করা হয় না নিয়মিত। উচ্চশিক্ষার জন্য সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা দেশের বাইরে আছেন, ওযেবসাইটে যথেষ্ট তথ্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বপরিমন্ডলে তুলে ধরতে পারছে না।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ বলেন, স্মার্ট দেশে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি এবং ফর্ম ফিলাপের জন্য সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে গাদাগাদি করে লাইনে দাড়িয়ে টাকা জমা দেওয়া অশোভনীয় বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থাকা সত্ত্বেও সেখানে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেজাল্ট প্রকাশ না করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুমি বলেন, ওয়েবসাইটে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ঢালাওভাবে প্রকাশের পর পরবর্তীতে আবার প্রত্যেক বিভাগের রেজাল্ট সংশোধন করা হয়। অনেক সময় রেজাল্ট মাইগ্রেশন হয়ে প্রাপ্ত সাবজেক্ট তালিকা ওপরে না গিয়ে নিচে নেমে যায়, যা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য বড় দুর্ভোগের বিষয়।
স্মার্ট দেশে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি এবং ফর্ম ফিলাপের জন্য সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে গাদাগাদি করে লাইনে দাড়িয়ে টাকা জমা দেওয়া অশোভনীয় বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থাকা সত্ত্বেও সেখানে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেজাল্ট প্রকাশ না করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। -গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই। আর স্মার্টফোন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (ss.brur.ac.bd) প্রবেশ করা যায় না। ফলে শিক্ষার্থীরা বাইরের কম্পিউটার দোকানগুলোতে যায়। অনেক সময় অনভিজ্ঞ কম্পিউটার অপারেটররা ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য পাঠানোর কারণে ভোগান্তির শিকার হন শিক্ষার্থীরা। তাই স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার ব্যবস্থা করা দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত এক শিক্ষক নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, অনেক সময় পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগে ওয়েবসাইটে এডমিট কার্ড তোলার অনুমতি দেয়া হয়। ফলে এডমিট কার্ড ছাড়াই অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে প্রথম পরীক্ষা দিতে হয়। এতে পরীক্ষার কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের খাতায় স্বাক্ষর করার সময় তাদের রোল, রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য তথ্য ভুল আছে কিনা তা চিহ্নিত করতে হিমশিম খায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সেশনজট নিরসনে কাজে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ প্রশংসনীয় অবদান রাখেন।কিন্তু আগের উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদের জন্য অটোমেশন সিস্টেমের সম্পাদিত ৮০ শতাংশ কাজের বাকি অংশ বর্তমান উপাচার্য দায়িত্বপ্রাপ্তির আড়াই বছরেও শেষ করেননি।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম বলেন, এসব সমস্যার কথা শুনেছিলাম। ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল বিষয় আমার জানা নেই।তবে না জেনে শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইটে যে ভুল তথ্য প্রবেশ করায়, তার সমাধানের জন্য নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ উৎসবে কর্মশালার আয়োজন করার জন্য ভিসিকে অবগত করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক ড. মো. মিজানুর রহমান এক সপ্তাহ ধরে তার সাথে সাক্ষাতের জন্য আশ্বাস দেন। তবে পরবর্তীতে ফোন কলে তাকে আর পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।