ছাত্রলীগ নেত্রীকে শ্লীলতাহানি

ঢাকা কলেজের ৪ ছাত্রকে মুচলেকায় ছাড়ল পুলিশ

ঢাকা কলেজ
ঢাকা কলেজ  © ফাইল ছবি

ছাত্রলীগের সাবেক এক নেত্রীকে মারধর, শ্লীলতাহানি, ছিনতাই ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগে ঢাকা কলেজের ৪ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিলেও তাদের গ্রেপ্তার না দেখিয়ে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। থানা থেকে চারজনেরই কেবল ডাক নাম জানানো হয়েছে। আর সবার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২৪ বছর। 

সাজন, শামীম, পলাশ ও ইসতিয়াক নামে এই চারজনকে গতকাল রবিবার রাতে লাভলী হোটেল থেকে ধরে এনেছিল নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে ইসতিয়াক ছাড়া বাকি তিনজন কলেজ ছাত্রাবাসের আবাসিক ছাত্র বলে জানা গেছে।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ২২ জুন রাতে তারা ঢাকা কলেজের ফটকের সামনে শুভ্র মাহমুদ জ্যোতি নামে একজনকে মারধর, শ্লীলতাহানি করে তার সোনার চেইন ও ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় রবিবার নিউ মার্কেট থানায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জ্যোতি।

মামলার বাদী জ্যোতি মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের যুগ্ম সাধারণ বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন। তিনি মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২২ জুন রাতে পৌনে ১টার দিকে পরিচিত ছোট বোন মৌসুমী আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা দিয়ে হাজারীবাগের তল্লাবাগের বাসায় যাচ্ছিলেন।

রিকশাটি ঢাকা কলেজের সামনে গেলে দুইজন হাত উঁচু করে ‘খারাপ অঙ্গভঙ্গি করে শিষ দিয়ে’ ডাক দেয়। তাদেরকে উপেক্ষা করে যাওয়ার পরও সেই দুইজন মোটরসাইকেল দিয়ে সামনে গিয়ে তাদেরকে বলেন, “বড় ভাই আপনাদের গেটে ডাকছেন”, এমন কথাও উল্লেখ আছে এতে।

বাদীর ভাষ্য, দুই বাইকার রিকশাওয়ালাকে ঘুরিয়ে গেটে নিয়ে যান। এ সময় দুই তরুণী তাদেরকে ডাকার কারণ জানতে চাইলে তাদের ‘অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়, চড় থাপ্পড় মারা হয়, জামাকাপড় টানাটানিও করা হয়।

মামলায় জ্যোতি লেখেন, এ সময় তারা আমার গলার চেইন টান দিয়ে নিয়ে যায় আর আমি কী করি তা তল্লাশি করার জন্য আমার ব্যাগও নিয়ে নেয় তারা। পরে ব্যাগ ফেরত দেয় এবং বাসায় গিয়ে দেখি ব্যাগে থাকা ৬০ হাজার টাকা নেই।

নিউ মার্কেট থানার ওসি শফিকুল গণি সাবু বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই আসামিদের আটক করে থানায় আনা হয়। আসামিসহ বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলায় প্রাথমিক তদন্তে মামলার ঘটনার বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্টতা পরিলক্ষিত হলেও আসামিদের বিষয়ে আরো বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজনীয়তা থাকায় আসামিদের বিধি মোতাবেক মুচলেকা নিয়ে আদালতকে অবহিত করা হয়েছে।

ঢাকা কলেজের এই চার শিক্ষার্থীকে থানায় ধরে আনার পর নিউ মার্কেট থানায় ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হাজির হন।

ওসি সাবু বলেন, তাদের শিক্ষার্থীদের কেন ধরে আনা হয়েছে তা জানতে থানায় এসেছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

পরে আনোয়ার হোসেন নামে এক শিক্ষকের কাছে ওই চারজনকে জিম্মায় দেয় পুলিশ। আনোয়ার হোসেন বলেন, এই চারজনকে পুলিশ আইন মেনেই আমাদের কাছে দিয়েছেন। এখানে কোন আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি।

এ বিষয়ে জ্যোতির বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।


সর্বশেষ সংবাদ