২২ জুন ২০২৩, ০০:২৭

সংবাদ সংগ্রহে থাকা সাংবাদিককে পেটানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

মো. নাহিদ হাসান  © টিডিসি ফটো

সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে প্রমোশনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে দায়িত্ব পালনরত এক গণমাধ্যম কর্মীকে পেটানোর অভিযোগ করেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। 

বুধবার (২১ জুন) রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সরাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ ৷ এসময় সরাসরি সম্প্রচারে ছিলেন বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী৷ এ সময় অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম জাগো নিউজে সরাসরি সম্প্রচারে (লাইভ) ছিলেন গণমাধ্যমটির ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাস প্রতিবেদক মো. নাহিদ হাসান (নাহিদ সাব্বির) ৷

এসময় পুলিশের এক উপ-পুলিশ পরিদর্শক এসে তাকে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও পুলিশ চড়-থাপ্পড় দিয়ে এই সাংবাদিকে হেনস্থা করেন।পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহে থাকা উপস্থিত সাংবাদিকরাও এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন।

ভুক্তভোগী গণমাধ্যমকর্মী নাহিদ বলেন, আমি লাইভ সম্প্রচারে ছিলাম। আমার গলায় জাগো নিউজের আইডি কার্ড ছিল। এসময় এক পুলিশ সদস্য এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলেও আমাকে চড় মারেন এবং হেনস্থা করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে গণমাধ্যমকর্মীরা নিরাপদ দূরত্বে থেকেই তাদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এমন আচরণ আমরা কখনো প্রত্যাশা করি না বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আশরাফ হোসেন বলেন, এটি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং এ নিয়ে আমরা মর্মাহত। সাংবাদিক ভাইয়েরা যারা আমাদের সাথে সারাদিন ছিলেন আমরা মনে করি তারাও আমাদের সহযাত্রী ও সহযোগী ছিলেন। তাদের উপরে যদি এভাবে আঘাত আসে সেটা আমি বলব আমার উপরে আঘাত। না চিনে না বুঝে হয়তো এমন চলে আসতে পারে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে আমি অনুরোধ করবো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে প্রমোশনসহ সাত দফা দাবি নিয়ে আজ দুপুর ১২টায় নিউমার্কেটের বলাকা সিনেমা হলের সামনে জড়ো হন। পরে সাত কলেজের শিক্ষকরা এসে আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীদের ইডেন কলেজের সামনে নিয়ে আসেন।

তখন শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট)  অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সাথে দেখা করতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীরা ইডেন কলেজের সামনে অবস্থান করে। আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবি মেনে নিলেও একটি মানেনি প্রশাসন৷ তাই এক দফা দাবিতে ইডেন কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেতে এসে পুনরায় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পুলিশ এবং সাত কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় থাকায় তাদের সড়ক থেকে সরানো যায়নি। পলে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।