১৯ জুন ২০২৩, ২১:১৭

বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে তিন চ্যালেঞ্জ

ভর্তি পরীক্ষা  © ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছে একক ভর্তি পরীক্ষা। সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সাবেক রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দেয়া হয় একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের।

তবে ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র বলছে কয়েকটি কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষে একক ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন অনেকটাই অসম্ভব। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে-

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনীহা: একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে উপাচার্যদের মতামত চেয়ে গত ৩০ এপ্রিল ৫৩ বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় ইউজিসি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মতামত জানিয়েছিল শুধুমাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে ১৫ জুনের মধ্যে মতামত জানানোর নির্দেশনা জানিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। কিন্তু বর্ধিত সময়সীমা শেষ হলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো মতামত জানায়নি ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয়। 

মতামত জানানো ৫ বিশ্ববিদ্যালয় হল- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। 

এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় চিঠিতে তাদের বিশেষত্ব এবং একক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের বিষয় উল্লেখ করেছে। এছাড়া অপর ৪ বিশ্ববিদ্যালয় একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক মতামত জানিয়েছে।

সময় স্বল্পতা: আগামী ১৭ আগস্ট শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং ব্যবহারিকসহ পরীক্ষা শেষ হবে ৪ অক্টোবর। সাধারণত পরীক্ষা সমাপ্তির দুই মাসের মধ্যেই ফলাফল প্রদান করা হয় এবং এর পরপরই শুরু হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম। এ হিসেব অনুযায়ী একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সময় রয়েছে মাত্র ৬ থেকে ৮ মাস। শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মতে এত স্বল্প সময়ে সম্পূর্ণ নতুন একটি পদ্ধতিতে এই বৃহৎ ভর্তি কার্যক্রম আয়োজন অনেকটাই অসম্ভব।

নির্বাচন: গত ৩ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পরিচালন নীতি ও শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষা নিতে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে পাবলিক পরীক্ষাগুলো যেমন বিভিন্ন বোর্ডের অধীনে নেওয়া হয় এটিও তেমন একটি সংস্থা হবে।

দেশের সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়টি এনটিএর মাধ্যমে হবে। সংসদে একটি স্বতন্ত্র আইন পাশের মাধ্যমে সংস্থাটি তৈরি করা হবে। কিন্তু চলতি বছরে নির্বাচনের কারণে নতুন আইন তৈরি, পর্যালোচনা, সংসদে উত্থাপনসহ প্রয়োজনীয় বিষয়মূহ সম্পন্ন করা চ্যালেঞ্জিং।