ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনের তদন্ত প্রতিবেদন অভিযুক্তদের হাতে
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি অভিযুক্তসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনের মূল অংশের সঙ্গে সাক্ষীদের নামের তালিকা এবং তাদের দেওয়া তথ্য প্রমাণাদিও রয়েছে। ফলে তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়া ছাত্রীরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা মূল প্রতিবেদনের একটি পৃষ্ঠা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরার দাবি তারা আদালত থেকে একটি মাধ্যমে প্রতিবেদনের কপি সংগ্রহ করেছেন। তবে আইন সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ ধরনের কপি আদালত থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।
উচ্চ আদালতে রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসীন বলেন, আদালত থেকে কঠোর নির্দেশনা ছিল এসব নথি গোপন রাখার এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। আদালত থেকে বৈধভাবে এসব প্রতিবেদন নেওয়া সম্ভব নয়। এটি প্রকাশ্যে আসায় সাক্ষীরা নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকবে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল গোপনীয়তা রক্ষা করা। এখন সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়া ও তাদের কোনো ক্ষতির জন্য প্রশাসনই দায়ী থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, আমাদের তথ্য গোপন রাখা হবে আশ্বাস দিয়ে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এখন নাম ও প্রদানকৃত তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের ডেকে নিয়ে এ পরিস্থিতিতে ফেললো।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদনের ছবি প্রকাশের বিষয়ে অভিযুক্ত অন্তরা বলেন, আমরা আদালত থেকে একটি মাধ্যমে প্রতিবেদনের কপি সংগ্রহ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পেজে দিয়েছি সেখানে কারও নাম ছিল না। আর সাক্ষীদের গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রশাসনের দায়িত্ব। তারা ব্যর্থ হয়েছে, এখানে আমাদের তো কোনো দায় নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই সাক্ষ্যগ্রহণ করেছি এবং প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। এরপরও কীভাবে এটি বাইরে এলো এটি আমার অজানা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমার কাছে থাকা কপি খুলেও দেখিনি। যদি বাইরে এসে থাকে সেটি আদালত থেকে হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আর নিরাপত্তার বিষয় আগে থেকেই দুই জেলার পুলিশ প্রশাসনকে জানানো আছে। তারা ও প্রক্টরিয়াল বডি বিষয়টি দেখবে।