ছুটিতে চিকিৎসা মেলে না ববির মেডিকেল সেন্টারে, বন্ধ লাইব্রেরিও
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মেডিকেল সেন্টার ও শহীদ আব্দুর বর সেরনিয়াবাত লাইব্রেরি ছুটির দিনে বন্ধ থাকছে। এতে চিকিৎসা সেবা ও পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় দুই ইদের ছুটি ছাড়া সারা বছর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও মেডিকেল সেন্টার খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে একরুমে আটজন করে থাকায় পড়ালেখার তেমন সুযোগ থাকে না। রিডিং রুমেও পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল নেই। হলে নেই কোনো মেডিকেল সেন্টারও। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন না পেয়ে আশপাশের মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করেন লাইব্রেরিতে। কিন্তু বন্ধের দিনে এ সুযোগগুলোও হারাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
মো. আব্দুল হামিদ নামের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার জানা মতে, প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির রিডিং রুম সাপ্তাহিক বন্ধের দিনসহ প্রতিদিন খোলা থাকে। হলে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর আবাস হবার কারণে অনেকের কাছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির রিডিং রুমই নিরিবিলিভাবে পড়ার শেষ ভরসা। কিন্তু এদিক থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতিক্রম।
তার ভাষ্য, এখানকার কর্তৃপক্ষ সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়টির আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ রাখে। ফলে এ দু’দিন ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। হলের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে অবস্থান করা অনেক শিক্ষার্থী চাকরির প্রস্তুতি নেন। তাদের সুবিধার্থে শুক্র ও শনিবারসহ প্রতিদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত খন্দকার বলেন, আমরা অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টারে গেলে প্রায়ই ঠিকমতো চিকিৎসা পাই না।বন্ধের দিনে অন্য কাজ না থাকায় আমরা পড়ালেখা করতে পারি। কিন্তু সেদিন লাইব্রেরি বন্ধ থাকে।
এক ছাত্রী বলেন, আমরা অসুস্থ হলে খুব সহজেই মেডিকেল সেন্টারে যেতে পারি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের দিনে আমাদের যেতে হয় শহরে শেরে বাংলা মেডিকেলে। যেটা সময়সাপেক্ষ এবং আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের এ যৌক্তিক দাবি পূরণ করবেন বলে আশা করছি।
আরো পড়ুন: মেস ও ভাড়া বাসায় থাকেন বেরোবির ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী
গ্রন্থাগারিক সহযোগী অধ্যাপক ড. ধীমান কুমার রয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীদের যাতে সুবিধা হয়, সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। লাইব্রেরি চলে দুই শিফটে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা ও ৩টা থেকে রাত ৯টা, মোট ১২ ঘণ্টা। শুক্র-শনিবার লাইব্রেরি খোলা রাখতে হলে আমাদের অতিরিক্ত কর্মচারীর প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে দাবি আসলে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার শাম্মী আরা নিপা বলেন, মেডিকেল সেন্টারে আমিসহ তিনজন চিকিৎসক ও একজন সাহায্যকারী আছি। এর মাঝে প্রায়ই আমাদের প্রশাসনিক কাজ থাকে। এই জনবল দিয়ে সপ্তাহে সাতদিন মেডিকেল সেন্টার চালানো সম্ভব নয়। জনবল চেয়ে প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, আমি নিজেও বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছি। এটি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজেসি) মেডিকেল সেন্টার ও লাইব্রেরির জন্য জনবল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। জনবল পেলে আমরা শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করব। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণে প্রশাসন বদ্ধপরিকর।