রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই যাদের কাটছে ঈদ
১৫ এপ্রিল থেকে ছুটি চলছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ছুটে গেছেন নিজ স্থায়ী নিবাসে। ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীদের ঘুরাঘুরি চলাফেরা। চলে গেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এসময়ে যখন ক্যাম্পাস পুরো জনমানবশূন্য, ঠিক তখনি পুরো ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব কাঁধে তুলে ক্যাম্পাসেই দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন আনসার সদস্য ও নৈশ প্রহরীরা। ক্যাম্পাসেই কাটাবেন ঈদ।
পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের। কারো কাছে তারা পরিচিত মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল। সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। ঈদের ছুটিতে শূন্য ক্যাম্পাসে তাদের দায়িত্ব ও বেশি। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ক্যাম্পাসটাকে আগলে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর তারা।
সারাদিন যাদের মামা, ভাই, আংকেল ডাক শুনে অভ্যস্ত তারা সে পরিচিত মুখদের বিদায়টা তারা দেখছেন চেয়ে চেয়ে। এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ!
এবার ঈদে পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত ১০ জন আনসার সদস্য ও নিরাপত্তা কর্মী। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুই ঈদ। এই দুই ঈদে প্রত্যেকেই চায় পরিবারের সাথে পরিবারের সাথে থাকতে।
কিন্তু কাঁধে তাদের রয়েছে গুরুদায়িত্ব। এই দায়িত্বের দায়বদ্ধতা থেকেই ঈদ আনন্দ বিসর্জন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে রাখছে নিরাপদ। তাদের এই ত্যাগই মনে করিয়ে দেয়, মানুষ একে অপরের জন্য। কেউ একজন সুখ পেতে হলে অপর আরেকজনকে ত্যাগ করতেই হবে।
ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে কথা হলো তাদের সঙ্গে। পরিবারের সাথে ঈদ করতে না পারা প্রসঙ্গে একজন আনসার সদস্য বলেন, বাসায় দুটো ছোট বাচ্চা আছে। মা আছে, স্ত্রী আছে। তাদের জন্য খারাপ লাগছে। কিন্তু এই খারাপ লাগা থাকলেও আমার কাছে দায়িত্ব পালনটাই গুরুত্বপূর্ণ। ভার্সিটি দেখেশুনে রাখতে পারছি এটা ও অনেক বড় একটা পাওয়া আমার জন্য। তবে পর্যায়ক্রমে আমরা ঈদের আগে ও পরে বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।
আরেকজন আনসার সদস্য বলেন, ভার্সিটি দেখেশুনে রাখা আমার দায়িত্ব। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সবাই চলে গেলেও এখানে সবকিছু দেখেশুনে রাখা আমার কর্তব্য। তবে বাড়ির জন্য খারাপ লাগলেও এখানে যে আমি আমার কাজ ভালভাবে করতে পারতেছি, ভার্সিটির নিরাপত্তা দিচ্ছি এটা ও আমার কাছে আনন্দ লাগে।