খরতাপ উপেক্ষা করে সবুজের পরতে ফুটেছে শ্বেতপদ্ম
গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে রাজশাহী কলেজের পুকুরে বড় সবুজ পাতার পরতে পরতে ফুটেছে শ্বেতপদ্ম। প্রচন্ড রোদের কিরণ আর সবুজ-সাদা মিশেলের চোখ জুড়ানো পদ্মপুকুরের দৃশ্যে বিমোহিত হচ্ছেন সাধারণ দর্শনার্থীরা। কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর কবিতায় সমস্ত বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজ করে এনেছিলেন ১০৮টি নীল পদ্ম। সাহিত্যে সেই নীল পদ্ম থাকলেও বাস্তবে তার দেখা মেলে না। তবে সাহিত্যে সাদা পদ্মের বিষয়ে কোনো ছন্দ না থাকলেও এসব শ্বেতপদ্মের অপরূপ দৃশ্য মন ভরিয়ে দেবে যে কাউকে।
সরেজমিনে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, প্রশাসনিক ভবনের পেছনের পুকুর ভরা ভাসমান পদ্মফুল ফুটে আছে অপরূপ সাজে। পদ্ম পুকুরের পুরোটা জুড়ে আছে সাদা-গোলাপী মিশেল দৃষ্টিনন্দন পদ্ম। এর কোনটি ফুটে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে আবার কলিরা রয়েছে শুভ্রতা ছড়ানোর অপেক্ষায়। পানির ওপর গোল পদ্মপাতাগুলো ভেসে আছে। এর ফাঁকে ফাঁকে মাথা উঁচু করে ফুটেছে পদ্ম। কোনোটি সম্পূর্ণ ফোটা, কোনোটি আধো-ফোটা, আবার কোনোটি শুধুই কলি।
রোজা ও ঈদের ছুটির জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সী দর্শনার্থীরা মনোমুগ্ধকর এমন দৃশ্য দেখে রীতিমতো মোহিত। পুকুর ঘাটে বসে পদ্মফুলের সৌন্দর্যে প্রশান্তির ছোঁয়া খুজছেন তারা।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে, পদ্ম (Lotus) Nymphaeaceae গোত্রের কন্দজাতীয় ভূ-আশ্রয়ী বহু বর্ষজীবী ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। গ্রামবাংলার মানুষের কাছে ফুলের জন্য পদ্ম অতি পরিচিত উদ্ভিদ। ভারতের জাতীয় ফুল পদ্মের আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nelumbo Nucifera। প্রায় সবসময় যেই জায়গায় পানি থাকে এমন জায়গায় ভালো পদ্ম ফুল জন্মে। এই ফুলগুলো সাধারণত গোলাকৃতি এবং এর পাতাগুলো পানিতে লেপটে থাকে। কখনো কখোনো উঁচু হয়েও থাকে।
কলেজে ঘুরতে আসা ইব্রাহিম হোসাইন বলেন, নগরীতেই আমার বাসা। ছুটির দিনে মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে আসি একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে। পদ্মপুকুরের পদ্মফুল দেখে চোখ আটকে গেলো। মনে হচ্ছে গ্রামের কোন পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছি। অসাধারণ সুন্দর প্রাঙ্গণ। পদ্মের এমন অপরূপ সৌন্দর্য মুহূর্তেই ভালো করে দেবে যে কারও মন।