‘আমরা যা বলবো তাই হবে হলে’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক আবাসিক ছাত্রকে হলের বৈধ সিট থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। এসময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভুক্তভোগী ছাত্রকে ‘আবাসিকতার কাহিনী বাদ দে, আমরা যা বলবো হলে তাই হবে’ বলে ভুক্তভোগী ছাত্রকে তার সিট থেকে নামিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় শনিবার (১ এপ্রিল) আবাসিকতা নিশ্চিত ও নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী ছাত্র মাহাদী হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ বাইরে থেকে কক্ষে গিয়ে দেখে তার তোশক-বালিশ ও বই-খাতাসহ অন্য জিনিসপত্র করিডোরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরেকজন এসে তাকে জানান যে, হলের ৪২৭ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগকর্মী ফহিম তাকে ডেকেছে। ওই কক্ষে গেলে তিনি কোন রুমে থাকেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ছাত্রলীগকর্মী তরুন, ফাহিম ও রাজু। এ সময় তিনি তার আবাসিকতাপ্রাপ্ত কক্ষে থাকার বিষয়ে জানান তাদের।
একপর্যায়ে তারা বলেন, ‘কে তোরে হলে তুলছে? তুই আমদের চিনিস? এখনও ভালোই ভালো ৪২৮ (কক্ষ) থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা।’ পরে নিরুপায় হয়ে বৈধ কক্ষ থেকে বের হয়ে তার বন্ধুর কক্ষে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে মাহাদী। শনিবার আবাসিকতা নিশ্চিত ও নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রভোস্টের কাছে আবেদন করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নামাজের সময় স্কুলের আসবাব চুরি করলেন ছাত্রলীগ নেতা!
লিখিত অভিযোগে অভিযুক্ত বাংলা বিভাগের তরুণ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের রাজুর নাম উল্লেখ করা হয়। তারা সকলেই শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফাহিম ফয়সাল বলেন, আমরা তাকে হল থেকে বের করে দেইনি। বরং সে ৩০৮ নম্বর কক্ষে প্রায় দু’বছর ধরে অন্য একজনের আবাসিক সিটে থাকে। ওই আবাসিক সিটের ছেলেকে যখন ৪২৮ নম্বর কক্ষে দেওয়া হয় তখন সে ওই কক্ষের আবাসিকতা দাবি করে। তাকে বলা হয়েছে, তুমি তো ৩০৮-এ থাকো, এখন এখানে কেন? তুমি ওখানেই থাকো বলে তার জিনিস নিয়ে যেতে বলি।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে সিট থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। কারণ সে ওই সিটে ওঠেনি। আর আমরা কোনও আবাসিক ছাত্রকে হলে উঠতে বাঁধা দেব না। আমরা সবসময় বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে সাহায্য করি।
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ৪২৮ নম্বর কক্ষে আবাসিকতা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কক্ষে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একজন থাকায় সে হল ছেড়ে দিলে সেখানে উঠতে বলা হয়েছিল। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। দু’পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।