ছয় মাসেও খণ্ডকালীন চাকরি পায়নি জবি শিক্ষার্থীরা
দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধি, রাজধানীতে ব্যয়বহুল জীবনমান ও আবাসন সংকট বিবেচনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অর্থ উপার্জনক্ষম করে তুলতে ক্যাম্পাসেই খন্ডকালীন চাকরি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: ইমদাদুল হক। ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের উন্নত দেশের মতো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঘণ্টা অনুযায়ী চাকরি দেবার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
তবে আশ্বাসের ছয়মাস অতিবাহিত হলেও শিক্ষার্থীরা দেখা পায়নি খণ্ডকালীন চাকরির। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা। শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছু আশ্বাসের ওপর দিয়ে চলে যায়। বাস্তবায়ন সে তো সোনার হরিণ।
জানা যায়, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ভিসি দপ্তরে পুলিশের উপ-পরিদর্শকের ৩৯তম ব্যাচে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়কালে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘণ্টা অনুসারে পার্টটাইম চাকরির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। পরিকল্পনা আছে, শিক্ষার্থীরা যেন বাইরের দেশের মতো ঘণ্টা অনুসারে খন্ডকালীন চাকরি করতে পারে।
তার মতে, অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যারা টিউশনি পায় না, আর্থিক অবস্থা খারাপ। তাদেরকে যদি পার্টটাইম চাকরির সুযোগ করে দেয়া যায়, তাহলে অন্তত থাকা-খাওয়ার আর্থিক যোগান হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক আহমেদ (ছদ্মনাম) বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের মূল্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেসভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে বাসা মালিকরা। এ তুলনায় টাকা উপার্জনের কোনও সুযোগ নেই। ফলে আমাদের হতাশায় দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় প্রশাসন থেকে খণ্ডকালীন চাকরির উদ্যোগটা প্রশংসনীয় ছিল। শিক্ষার্থীরাও অনেক আশা করেছিল। কিন্তু প্রশাসন পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছু আশ্বাসের ওপর দিয়েই চলে। এটা নতুন কিছু নয়। এগুলো প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। তবে আমরা আশাবাদী বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুতই শিক্ষার্থীদের জন্য খন্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমাদের লাইব্রেরিয়ানকে একটা পরিকল্পনা দিতে বলেছি। তারা এখনো দেয়নি। পরিকল্পনা দিলেই কার্যক্রম শুরু হবে। কারণ শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম জবের জন্য আমাদের লাইব্রেরি ছাড়া অন্য কোথাও সুযোগ নেই।
গ্রন্থাগারিক মো. এনামুল হক বলেন, আমাদের সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্টের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। এছাড়া আমরা একটা প্ল্যান (রাফ) তৈরি করে রেখেছি। উপাচার্য ব্যস্ত থাকায় এখনো তাকে দেখানো হয়নি। আমরা দ্রুতই প্ল্যানটি উনাকে দেখিয়ে চূড়ান্ত করে ফেলবো।