০৫ মার্চ ২০২৩, ২০:১০

‘আমি হল ছাত্রলীগের সভাপতি, আমার কথায় সব চলবে’

কুবির শেখ হাসিনা হল  © ফাইল ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মাহজাবিনের বিরুদ্ধে হলের আসন বরাদ্দ নিয়ে প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমানকে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে। হল প্রশাসনের বরাদ্দ দেওয়া আসন দখলে ফাইজা নিজের পছন্দের ছাত্রীকে তোলাকে কেন্দ্র করে এ বাক-বিতণ্ডার সূত্রপাত।

গত শনিবার (০৪ মার্চ) সন্ধ্যায় হলের প্রাধ্যক্ষ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ফাইজা মাহজাবিন হলের ২১৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। ফাইজার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর হলেও তার পরিবার বর্তমানে কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা এলাকায় থাকেন।

জানা গেছে, শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রেয়সী সানাকে আসন বরাদ্দ দেন। ওই ছাত্রী গতকাল ওই কক্ষে উঠতে গিয়ে দেখেন, সেখানে রায়হানা আনজুম নামের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী আছেন। বিষয়টি প্রেয়সী হল প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি দুজনকে তার কার্যালয়ে ডেকে আনেন।

এরপর সেখানে হাজির হন ফাইজা মাহজাবিন। প্রাধ্যক্ষ পদার্থবিজ্ঞানের ওই শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চান, ‘আপনি কীভাবে হলে উঠলেন?’ তখন ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমাকে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তুলেছেন।’ তখন ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ‘আমি তাকে তুলেছি।’ প্রাধ্যক্ষ কারণ জানতে চাইলে ফাইজা বলেন, ‘যাকে যেখানে খুশি সিট দেব, আপনি কে? আমি হল ছাত্রলীগের সভাপতি। হলে আমার কথায় সব চলবে।’

আরও পড়ুন: বদরুন্নেসা কলেজছাত্রীকে মারধর করে কক্ষ দখলের চেষ্টা ছাত্রলীগের

সহকারী প্রাধ্যক্ষ আল-আমিন এবং ওই কক্ষে থাকা আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রেয়সী সানা প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী ফাইজা মাহজাবিন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সিনিয়র দেখে পদার্থবিজ্ঞানের ওই ছাত্রীকে হলে তুলেছি। আমি কোনো ধরনের অশালীন কথা বলিনি। কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। প্রভোস্ট (প্রাধ্যক্ষ) স্যারকে বলেছি, মেয়েটির সিট দরকার।’

তবে প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, হলে কোনো শিক্ষার্থী উঠবেন আর কোনো শিক্ষার্থী উঠবেন না—সেই এখতিয়ার সম্পূর্ণ হল প্রশাসনের। একজন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। অথচ ফাইজা আমাকে বলেছেন, “যাকে যেখানে খুশি সিট দেব, আপনি কে?” ফাইজা নিজেও এখনো হলের ফি দেননি। গত বছরের ৩১ জুলাই শেখ হাসিনা হলের যাত্রা শুরু হয়েছে।