০১ মার্চ ২০২৩, ২৩:৩৬

প্রভোস্ট ও হাউস টিউটররা হলে যেন সর্বোচ্চ সময়টুকু দেন: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট  © ফাইল ফটো

প্রতিটি হল বা হোস্টেলে প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরের  (আবাসিক শিক্ষক) মতো পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক থাকেন, তাদের উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত ঘটনা কমাতে পারে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রভোস্ট ও হাউস টিউটররা যেন সর্বোচ্চ সময়টুকু দেন, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন হাইকোর্ট।

 আজ বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হলে ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করার পর কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আজ আদেশ দেন আদালত। কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী দলের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তির ইতিহাস নষ্ট করছেন বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণে এসেছে।  

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হল বা হোস্টেলের এক ভবনে বহু শিক্ষার্থী থাকেন। শিক্ষার্থীদের আবাসন–সংকটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে। প্রতিটি হল বা হোস্টেলে পর্যাপ্তসংখ্যক প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরের মতো শিক্ষক থাকেন। তাঁদের উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত ঘটনা কমাতে পারে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যায়, এই শিক্ষকেরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে আন্তরিক নন। এমনকি সংশ্লিষ্ট হলে সর্বোচ্চ সময়টুকু কাটান না; বিশেষত রাতের পালায়। প্রভোস্ট ও হাউস টিউটররা যেন সর্বোচ্চ সময়টুকু দেন, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। তারা প্রয়োজন হলে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তাও নিতে পারেন।

হাইকোর্টের আদেশে এ এস এম মাহাদী হাসান এবং অন্যান্য বনাম সরকার’ শীর্ষক মামলায় ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। এটি সংক্ষেপে বুয়েট মামলা (র‍্যাগিং নিয়ে) নামে পরিচিত। রায়ের পর্যবেক্ষণ টেনে আদালত বলেন, এ ধরনের র‍্যাগিং যেটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নবাগতদের পরিচিতি অনুষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এখন র‍্যাগিংয়ের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ফৌজদারি অপরাধ সংগঠন করছেন। ওই রায়ে র‍্যাগিংকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রায়ে র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের মতো কার্যক্রম রোধে ছয় দফা নির্দেশনাও তুলে ধরা হয় আজকের আদেশে।

এছাড়া পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবরে দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্টভাবে আবাসিক হল ও হোস্টলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছেন। কলেজ জীবন পেরোনোর সময় তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে নিষ্পাপ শিক্ষার্থী, বিশেষত নবাগতদের অপমান ও নির্যাতন করেন। এ ধরনের কিছু অবাধ্য ছাত্র শিক্ষার মানসম্মত পরিবেশ নষ্ট করছেন। এমনকি দলীয় শৃঙ্খলাও ভঙ্গ করছেন। দলের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তির ইতিহাস নষ্ট করছেন।