‘অভিযুক্ত যে-ই হোক, কেন্দ্রের কাছে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করবো’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাতভর ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের অভিযুক্ত যদি কেউ থাকে এবং যদি প্রমাণিত হয়, আমরা তখন সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করবো বলে জানিয়েছেন ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়।
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
নাসিম আহমেদ জয় জানিয়েছেন, শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রমের পাঁচ কর্মদিবসের আজকে শেষ দিন। আমরা ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথেই কথা বলেছি এবং আমরা সবসময় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে যোগাযোগ রাখছি। আমরা আশা করি আমাদের তদন্তের রিপোর্টটা আজকের মধ্যে কেন্দ্রে জমা দিবো।
ফুলপরীর সার্বিক নিরাপত্তা এবং তার স্বাভাবিক জীবনে আসার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব বা যতটুকু দরকার তা নিশ্চিত হবে বলেও জানান তিনি।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশংকার কোনো কারণ নেই; ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য কাজ করে আসছে।
এছাড়াও এই বৃহৎ সংগঠনের মধ্যে যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে সেই অভিযোগটা যদি অভিযুক্ত ব্যক্তির একান্ত হয়ে থাকে তখন সেই দায় সংগঠন নিবে না। আমরা চেষ্টা করি কেউ যদি সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে দুষ্কৃতি করার চেষ্টা করে সেই সব দুষ্কৃতকারীদের কে আমরা সংগঠন থেকে ব্যবস্থা নিবো এবং সেটি যদি প্রমাণিত হয় প্রয়োজনে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো-যুক্ত করেন তিনি।
এর আগে, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনের উপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় ১৫ই ফেব্রুয়ারি কামরুল হাসান অনিককে আহবায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুতের নির্দেশ দেয় শাখা ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবির) নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুম। নির্যাতনের পরের দিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী।
সে সময় নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী জানিয়েছিলেন, ৪ ঘণ্টা ধরে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিচ্ছিল আর এর ফাঁকে ফাঁকে শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। নির্যাতনের একপর্যায়ে বিবস্ত্র করে ভিডিওধারণ করা হয়। তখন কাঁদতে কাঁদতে আমি পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তারা কোনো কথা শোনেননি। গণরুমে এ সময় উপস্থিত সাধারণ ছাত্রীরাও কোনো কথা বলেননি। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আজ তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে; যা উচ্চ আদালতের কাছে পাঠাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।