২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৫

ইবিতে ভিসির ফাঁস হওয়া অডিও বাজিয়ে বিক্ষোভ

ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন চাকরি-প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা  © টিডিসি ফটো

টানা তৃতীয় দিনের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের অডিও ফাঁসের ঘটনায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরি-প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

আজ তার ভিসির কার্যালয়ের সামনে তাঁকে আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ উল্লেখ করে অপসারণের দাবিতে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা। একই সাথে তারা প্রশাসন ভবনের সামনে উপাচার্যের ফাঁস হওয়া অডিও বাজাচ্ছেন। এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ইবি ক্যাম্পাসে।

এদিন পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান টিটু এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাসেল জোদ্দারের নেতৃত্বে কার্যালয়ের সামনে ভিসির অপসারণের দাবিতে অন্তত ৩০ জনকে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে। এ সময় তারা ছাত্রলীগের ভিসির বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিতে থাকেন। আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন এবং তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। 

‘ফারাহ জেবিন’ ও ‘মিসেস সালাম’ নামে দুইটি ফেসবুক আইডি থেকে গেল বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভিসির ‘কণ্ঠসদৃশ’ পরপর পাঁচটি আলাপনের অডিও পোস্ট করা হয়। পরে ‘আল বিদা’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে অন্য আরেকটি অডিও ফাঁস হয়। অডিওগুলোতে অগ্রিম চাকরির প্রশ্নফাঁস ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ভিসিকে কথা বলতে শোনা যায়। একই দাবিতে আগে শনিবার ও সোমবার তারা একই দাবিতে ভিসির কার্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করেন।

ইবি উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের কার্যালয়ে তালা থাকায় তিনি ক্যাম্পাসের ভেতরে বাসাতেই থাকছেন। সেখান থেকেই প্রয়োজনে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের ডেকে তার দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করছেন। গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে উপাচার্য-বিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা উপাচার্যের অপসারণ দাবি করে এবং তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে সোমবার ক্যাম্পাসের বাংলোতে বসেই সারা দিন অফিস করেছেন উপাচার্য। বিভিন্ন সময়ে সেখানেই প্রক্টরসহ শিক্ষকদের ডেকে সভা করেন। এর মধে্যই সেদিন দুপুরে ডিভাইসের খোঁজে আধা ঘণ্টার জন্য কার্যালয় খোলা হয়। তল্লাশি শেষে আবার তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও গতরাতে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে ফুল দেন উপাচার্য। এরপর পরই তিনি দ্রুতই বাংলোতে ফেরেন পুলিশি প্রহরায়।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সরকারি ছুটি থাকায় তিনি বাংলোতে থাকেন। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এখন পর্যন্ত তিনি বাংলোতেই রয়েছেন।

এ নিয়ে উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের পিএস আইয়ুব হোসেন জানান, তিনি কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে যাচ্ছেন; উপাচার্য গত শনিবার যশোর ছিলেন। রোববার ছুটি ছিল, সোমবার বাসাতেই অফিস করেছেন। মঙ্গলবার ছুটি ছিল। তালা লাগানোর বিষয়টি জানা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে আজ তালা লাগানো আছে কি না, তা জানি না। গিয়ে দেখবো; তালা লাগানো থাকলে সেটি ভেঙে কার্যালয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।