কারমাইকেল কলেজের হোস্টেলে বহিরাগতদের হামলা, আহত ১০
রংপুরের কারমাইকেল কলেজের জিএল হোস্টেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাঙচুর করেছে বহিরাগতরা। এ ঘটনায় শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমজাদ হোসেন। এছাড়াও ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাসের কথাও জানান তিনি।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয়, আমার সন্তানদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে মামলা করব। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি তুলেছে, সেটিও আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করব।
এর আগে, গতকাল দুপুরে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের আহসান নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মাদকাসক্ত এক টোকাইয়ের তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে বহিরাগত টোকাইদের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করে। এ খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে বহিরাগতদের ধাওয়া দেওয়ায় তারা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: লাখ ছাড়াল মেডিকেলে ভর্তি আবেদন
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৪০-৫০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসের জিএল হোস্টেলে অতর্কিত হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় হল মনিটর আকিমুল ইসলাম ইমনসহ প্রায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আকিমুল ইসলামকে গুরুতর আহতাবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পরপরই বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, ক্যাম্পাসে দ্রুত পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ কয়েক দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অধ্যক্ষকে জিএল হোস্টেলে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিকেলে দেখতে এসে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেন বলেন, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও যথাযথ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের যেকোনো কর্মসূচিতে পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।
অন্যদিকে কারমাইকেল কলেজ শিক্ষার্থী পরিষদের আহবায়ক রেজওয়ান আহমেদ সৌধ বলেন, আমরা সবসময়ই ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ করে আসছি। তবে আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিকেল হলেই ক্যাম্পাসে টোকাই, বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ে। এরই সাথে প্রায়ই মোবাইল ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও বাড়ছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কলেজ প্রশাসন এখনও লিখিত অভিযোগ জানায় নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।