শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতে আন্তর্জাতিক মান নেই জবির ২২ বিভাগে
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ প্রকাশিত ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে আন্তর্জাতিক মানদন্ড নেই। আন্তজার্তিক মানদন্ড অনুযায়ী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নূন্যতম গড় অনুপাত ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২টি বিভাগ এবং ১ ইন্সটিটিউটে রয়েছে ভিন্ন চিত্র।
ইউজিসি প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট থেকে বর্তমানে পাঠাদান করা হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৫ হাজার ৯৬০জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ৬৭৮ জন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:২৪। আন্তর্জাতিক মানদন্ডের বাইরে থাকা বিভাগগুলোর মধ্যে কলা অনুষদের ৮টি, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ৪টি,বিজ্ঞান অনুষদের ১টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৭টি, আইন অনুষদের ২টি বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের আইন বিভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতে সবচেয়ে পিছিয়ে। এই বিভাগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৪০। বিভাগটিতে ৫৫৪ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ১৪ জন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, আমাদের বিভাগে সম্প্রতি দুইজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক বাইরে রয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের বিষয় জানিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন: ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে উপাচার্যদের সঙ্গে আজ বসছে ইউজিসি
শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের প্রায় একই চিত্র ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগে। এখানে প্রতি ৩৯ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছেন ১ জন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের চার বিভাগের মধ্যে সবগুলোই মানদণ্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ। এর মধ্যে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে প্রতি ৩৭ জন শিক্ষার্থী জন্য ১ জন একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে ৩৬ জনের জন্য ১ জন, ফিন্যান্স বিভাগে ৩২ জনের জন্য ১ জন এবং মার্কেটিং বিভাগে ৩১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক রয়েছেন।
এ ছাড়া যেসব বিভাগে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত নেই, সেগুলো হলো কলা অনুষদের বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, দর্শন বিভাগ, সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগ,বিজ্ঞান অনুষদের পরিসংখ্যান বিভাগ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, লোকপ্রশাসন বিভাগ ও ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।
তবে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ফার্মেসী ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ। এই বিভাগ দুইটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:১০। অর্থাৎ প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১জন শিক্ষক রয়েছেন।
জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তুলনামূলক নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড সব বিভাগে বজায় নেই। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের জন্য।