বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল (সোমবার) রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার রিয়াদ হোসাইন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ৭টায় কুষ্টিয়া হাসপাতাল মোড় থেকে ক্যাম্পাসের বাসে ওঠেন রিয়াদ। বাসে উঠে সামনের দিকের সিটে বসতে যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সামিউল ইসলাম সামনে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন। এ সময় রিয়াদ সামনে সিট ধরা আছে জানালে সামিউল তাকে ভেতর দিয়ে না গিয়ে নেমে অন্য দরজা দিয়ে উঠতে বলে। তার কথা না মেনে ভেতর দিয়ে সামনে যেতে চাইলে সামিউল ও তার সঙ্গীরা রিয়াদকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
পরবর্তীতে, বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে পৌঁছালে রিয়াদ নামামাত্রই সামিউল তার উপর চড়াও হন। এ সময় সামিউল এবং তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী সিয়াম, নাবিলসহ ৭-৮ জন তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। পরে ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস আর কি হতে পারে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সকলের বিচার চাই।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের রাতভর সংঘর্ষ, আহত ৯
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সামিউল ইসলাম বলেন, বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভিতর দিয়ে যেতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারো তর্কে লিপ্ত হয়। এসময় ও ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধমকি দেইনি।
জানা গেছে, মারধরকারী সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথা কাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের উপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। আমরা আগামীকাল ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তর বক্তব্য শুনে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবো।