০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:৩০

রাজনৈতিক উত্তাপে শুরু, ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল আর নিয়োগ বিতর্কে বছর শেষ

রাজনৈতিক উত্তাপে শুরু, ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল আর নিয়োগ বিতর্কে বছর শেষ  © টিডিসি ফটো

শুরু হয়েছে নতুন বছর। বিদায়ী বছরে ছোট-বড় নানা ঘটনায় আলোচিত-সমালোচিত ছিল লালমাটির ক্যাম্পাস খ্যাত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিবাচক-নেতিবাচক নানা ঘটনায় বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হতে হয়েছে দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের এ বিদ্যাপীঠকে। ২০২২ ছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক উত্তাপের বছর। রয়েছে প্রশাসনিক অনিয়মের ঘটনাও। বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ লেগেছিলো; যা ছিল সারাবছর জুড়েই। ছিলো অর্জন ও প্রত্যাশা-প্রাপ্তিও। এমনই কিছু আলোচিত ঘটনা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাছান আল মাহমুদ।

রেজিস্ট্রার বিরোধী আন্দোলন
বছরের শুরুতেই কুবিতে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে রেজিস্ট্রার বিরোধী আন্দোলন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি বঞ্চিত করা, জামাত-শিবির পন্থীদের সুবিধা প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের একাংশের নেতৃবৃন্দ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর শেষ সময়কালকে কেন্দ্র করে এ রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের একপর্যায়ে রেজিস্ট্রার ভবন তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারীদের আরেকটি পক্ষ। পরে তালা দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের বাক-বিতণ্ডা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

নতুন উপাচার্য নিয়োগ
নতুন বছরের শুরুতেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন। গত ৩১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে পরবর্তী চার বছর দায়িত্ব পালন করবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের ব্যক্তিকে জায়গা করে দিতে প্রশাসনিক রদবদল ও বিভিন্ন কাজে অনিয়মের অভিযোগে বিতর্কের পিছু ছাড়ছে না উপাচার্যকে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি পক্ষ উপাচার্যপন্থী ও আরেকটি পক্ষ শিক্ষক সমিতি হিসেবে রাজনৈতিক মেরু দাঁড়িয়েছে।

বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নিয়োগ
গেল ২২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পান ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী ওমর সিদ্দিকী। ঐ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ জন সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০ জন অধ্যাপককে রেখে একজন সহকারী অধ্যাপককে এ পদে বসানো নিয়েও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও নতুন নিয়োগ পাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মাদককে প্রশ্রয়, ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নির্লিপ্ততা, উপাচার্যের কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার, সম্প্রসারিত প্রকল্পে ভূমি বাণিজ্য, প্রভাব বিস্তার করে ভূমি বাণিজ্যে জড়িতদের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ পাইয়ে দেওয়া সহ বিস্তর অভিযোগ উঠে। তবে এসকল অভিযোগ থাকলেও বহাল তবিয়তে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর পদে থাকেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।

শিক্ষক সমিতি, ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রশাসনের দূরত্ব
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগের সাথে নানা কারণে সমম্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ভর্তি পরীক্ষার আয়কৃত টাকা থেকে শিক্ষক সমিতির প্রস্তাবে মেধাবী ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হলেও অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির কোনো প্রতিনিধিকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তখন। আমন্ত্রণ জানানো হয়নি শাখা ছাত্রলীগকেও।

এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি অনুষ্ঠানে এ সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করেছেন তারা। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলো শিক্ষক ও ছাত্র নেতারা। যদিও আগের উপাচার্যের সাথে এমন সমন্বয়হীনতা দেখা যায়নি। এছাড়াও বিভিন্ন পদ প্রাপ্তিতে উপাচার্য একটি পক্ষকেই সুবিধা দিয়ে আসছেন। 

এছাড়াও বছরের শেষের দিকেও সমন্বয়হীনতার অভাবে প্রশাসনের আগেই বিজয় দিবস উদযাপন করে ছাত্রলীগ। এসময় প্রশাসন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান ও বিএনপি-জামায়তের দালাল প্রশাসন বলে দাবি করেন তারা। 

রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নিয়োগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্ব পালনে অস্বস্তিবোধ করছেন জানিয়ে গত ২২ মার্চ পদত্যাগপত্র করেন সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের একটি অংশ মিথ্যা তথ্য প্রচার, অযৌক্তিক দাবি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে তিনি বিব্রত জানিয়ে এ পদত্যাগ করেন।

তবে পদত্যাগের প্রায় ৫ মাস রেজিস্ট্রারবিহীন প্রশাসনিক কাযক্রম পরিচালনা করেন উপাচার্য। পরে দাবির মুখে ২৪ আগস্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিরুল হক চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া। যদিও সেখানে অনেক সিনিয়র কর্মকর্তাকে বঞ্চিত করে তাকে এ পদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

টেন্ডার নিয়োগের দাবিতে উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ
গত ৩১ মার্চ ছাত্রলীগের দাবি না মানায় ‍উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ করে বাগবিতন্ডায় জড়িয়েছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় চাকরির দাবিতে উপাচার্যের গাড়ির সামনে বসে পড়েছিলো ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ।

এসময় আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতাকে এবিষয়ে ফোন দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলো কুবি উপাচার্য। এই ঘটনার জের ধরে কুবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ উপাচার্যকে মঈন কবির রিজভী বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে গত ২১ জুলাই  ছাত্রলীগের সাথে উপাচার্য বাগবিতণ্ডায় জড়ালে ছাত্রলীগকে একটি টেন্ডার দিয়েছেন দাবি করেন কুবি উপাচার্য।

ছাত্রলীগ কাণ্ড: প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
বছরজুড়েই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড। এর আগে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে দলটির ছোট-খাটো গ্রুপগুলোকে। তবে ২০২২ সালে লাল মাটির ক্যাম্পাসকে সম্মুখীন হতে হয়েছে উদ্বেগজনক কিছু ঘটনায়। উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা হলো-

১। গত ১১ এপ্রিল মেসেঞ্জারে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

২। ১২ আগস্ট আঞ্চলিক সংগঠনের কমিটিতে পছন্দের নেতাকে আনতে প্যাডে চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ তারেকুল ইসলামের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়েছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ।

এ ঘটনায় সংগঠনটির সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘আত্মহত্যা’র স্ট্যাটাস দিয়ে নিখোঁজ হন। চট্টগ্রাম স্টুডেন্ট’স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

৩। পূর্বঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে দু’হলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। এসময় কয়েকবার উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হলে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতাকর্মীরা তাদের স্ব-ঘোষিত পার্টি অফিসে নিয়ে যায়। পরে তাদের পূর্বের ঘটনা নিয়ে তাদের বিচার করেন। তবে এ ঘটনা প্রশাসনকে ছাত্রলীগের উপর বিচারের ভার চাপিয়ে দায় সারতে দেখা যায়।

৪। ৯ সেপ্টেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। জুমার নামায শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে দুই হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক সংলগ্ন হোটেলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের এক কর্মী দুপুরের খাবার খেতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় রামদা, রড, হকি স্টিক, প্লাস্টিকের পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’পক্ষের ইটপাটকেলে গণমাধ্যমকর্মীসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না দেওয়ায় ঘটনার তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনা বৃদ্ধির জন্য শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ভূমিকাকে দায়ী করেন। পরে এই ঘটনার জের ধরে ২দিন সকল ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করে দেয়।

এসব ঘটনায় সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ধরণের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া কতটুকু সমীচীন? 

ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ প্রদান
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রথমবারের মতো ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগের ২৩৭ জন শিক্ষার্থীকে এ স্কলারশিপ দেওয়া হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের হাতে ৮ হাজার ৫০০ টাকার হস্তান্তর করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।

পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বিতর্কিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
নির্দিষ্ট এক প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান নীতিমালা লঙ্ঘন করে একই সাথে দুই নীতি অনুসরণ করে ‘অভিনব’ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ বিজ্ঞপ্তি কোনোভাবেই বিধিসম্মত নয় বলে বলে মন্তব্য করেছে ইউজিসি। এ বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের কার্যালয়ে গিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও প্রতিবেদকের সাথে দেখা করতে রাজি হননি তিনি।

কুবি শিক্ষার্থীদের তৈরি তৃতীয় রোবট ‘নিকো’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের তৈরি করা তৃতীয় রোবট ‘নিকো’। কথা বলা রোবট ‘সিনা’ ও ‘ব্লুবেরি’র পর এবার শিক্ষার্থীরা তৈরি করলেন রোবট ‘নিকো’। রোবট নিকো চলাফেরা বা কথা বলার পাশাপাশি মানুষের ছবি দেখে বলে দিতে পারবে পরিচয়। মানুষের সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারবে। যেকোন এলাকা থেকে ছবি তুলে ভিডিও করে তথ্য দিতে পারবে নিকো। এছাড়া নিকোকে চাইলে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।

ছাত্রীদের নতুন হল উদ্বোধন
৩১ (রবিবার) জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের বহুল প্রতীক্ষিত শেখ হাসিনা হলের উদ্বোধন করা হয়। ঐদিন বেলা ১১টায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন কেক ও ফিতা কেটে এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে হলটির উদ্বোধন করেন।

ভারপ্রাপ্তে-ভারাক্রান্ত কুবি
ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পূর্ণকালীন নিয়োগ দেয়ার জন্য বলা হলেও কুবির রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)ও পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদগুলো ভারপ্রাপ্তে চালানো হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য হচ্ছে অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

গবেষণায় বাজেট বৃদ্ধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়। যার পরিমাণ ৬৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এবারের বাজেটে গবেষণা খাতে প্রায় ৭৯ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাজেটের ৫৯ শতাংশ ব্যয় করা হবে বেতন ও ভাতাদি বাবদ।২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যেখানে গবেষণা বাবদ ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

শিক্ষক সমিতির নির্বাচন স্থগিত
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। সবার উপস্থিতিতে এ স্থগিতের সিদ্ধান্ত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. জিএম. মনিরুজ্জামান।

এর আগে ওইদিন সকাল ৯ থেকে নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেন বলে জানা গেছে। তাদের দাবি, নির্বাচন হয় শিক্ষক লাউঞ্জে, কিন্তু এবার অনুষ্ঠিত হয় বিজ্ঞান অনুষদে। পরে বেলা ১টা পর্যন্ত দরজার প্রবেশ পথ অবরোধ করে রাখেন তাঁরা। এদিকে অন্যরা ভোটের জন্য বাহিরে দাঁড়ালেও বাঁধার মুখে একটি ভোটও পড়েনি কেন্দ্রে।