২২ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:৩৭

গুচ্ছে মাইগ্রেশন চালু রাখার দাবিতে আমরণ অনশনে অনি

অনশনরত শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

গুচ্ছ অধিভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে মাইগ্রেশন চালু রাখার দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টা থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর গেটে আমরণ অনশন শুরু করেন মাহফুজ আলম অনি নামের ওই শিক্ষার্থী। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, মাহফুজ আলম অনির বাড়ি নীলফামারী জেলার চিলাহাটী ইউনিয়নে। তিনি চিলাহাটি সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এবং এবছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটে অংশ নিয়ে ৫৫ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোনায় বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।

জানা গেছে,  গত সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ভর্তি কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে সপ্তম মেধাতালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় গুচ্ছ কমিটি। তারা বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে ভর্তিচ্ছুরা গুচ্ছভুক্ত এক বা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হলে তাকে অবশ্যই তার পছন্দমত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় গুচ্ছভুক্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না।

এই পর্যায় থেকে প্রাথমিক ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে না (বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ)। ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিভাগ পছন্দক্রম ও মেধা স্কোরের ভিত্তিতে প্রযোজ্যক্ষেত্রে বিভাগ মাইগ্রেশন চলমান থাকবে।

আরও পড়ুন : গুচ্ছে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের 

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও মাইগ্রেশন চালু রাখার দাবিতে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করছে শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দারি পরিপ্রেক্ষিতে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার কথা বললেও বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম মেধাতালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে গুচ্ছ ভর্তি সংক্রান্ত মূল কমিটি। এর প্রতিবাদে আমরণ অনশন শুরু করেছেন মাহফুজ আলম অনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহফুজ আলম অনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গুচ্ছ ভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্তে আমি ভালো স্কোর নিয়েও ভালো সাবজেক্ট এ পড়ার সুযোগ পাবে না ও পছন্দমতো আবেদনের সুযোগ পেলেও একটি প্রতিষ্ঠানে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) ভর্তি থাকায় তা পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এটা অন্যায়। গুচ্ছ ভর্তি সংক্রান্ত কমিটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আমি অনশন চালিয়ে যাব। 

ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আমাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি অনশন অব্যাহত রাখবো। এখন অন্য কোথাও বসব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির সভায় উপস্থিত থাকা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেটিই বহাল রাখা হয়েছে। এটি পরিবর্তন হচ্ছে না। গুচ্ছভুক্ত অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাইগ্রেশন বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ না করলে ক্লাস শুরুর প্রক্রিয়া অনেক পিছিয়ে যাবে। এতে সেশনজট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে মাইগ্রেশন বন্ধ রাখার পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই দেশের ১৯ কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে একযোগে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের, ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গুচ্ছের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে ৮৫ হাজার ৫৮২ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৪৮ হাজার ১০৬ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ২৩ হাজার ২২৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পাস করেছেন।