১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৪১

খসছে ছাদের পলেস্তারা, দেয়াল ফাটা—এরমধ্যেই চলছে ক্লাস

শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন  © টিডিসি ফটো

ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে আশা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের। উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স মিলে আট হাজার ৮৩৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও কলেজে রয়েছে মাত্র তিনটি ভবন। এরমধ্যে দু’টিই ঝুঁকিপূর্ণ, ধসে পড়তে পারে যেকোনো সময়।

ভবনগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, নতুন ও পুরোনো ভবনের দেয়াল এবং ছাদের অনেক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। কয়েকটি ক্লাসরুমের ছাদের অনেকাংশ খসে পড়েছে। বেরিয়ে এসেছে রড। এছাড়া ভবনের পিলারের মধ্যে ফাটল ধরেছে।

১৯৪৯ সালের ১১ নভেম্বর কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নলগোলার ক্যাম্পাসে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে কলেজটিকে স্থানান্তর করা হয় পুরান ঢাকার লক্ষীবাজারে। এরপর থেকে কলেজটিতে ভবন তৈরি করা হয়েছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে একটি তিন তলা পুরোনো ভবন। আরেকটি তিন তলা নতুন ভবন। অপর ভবনটি পাঁচ তলা। এরমধ্যে তিন তলা পুরোনো ও নতুন ভবনটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে।

জানা গেছে, কিছু দিন আগেও ক্লাস চলাকালে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ক্লাসরুম এবং অর্থনীতি বিভাগের ক্লাসরুমের ছাদের কিছু অংশ খসে পড়ে।  ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

তারা বলছেন, নতুন ভবন তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ক্লাস করতে হবে। একটা দূর্ঘটনা না ঘটলে হয়তো আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। এমন একাধিক বিভাগ আছে, যেগুলোর একটি ক্লাসরুমে ক্লাস নিতে হয়। সে হিসাবে সাপ্তাহে তিন দিন করে ক্লাস নিতে পারে একটি বিভাগ। এর মধ্যে থাকে অনার্স প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষ এবং  মাস্টার্সের ক্লাস। ফলে অনেক সময় সিলেবাস সম্পন্ন না করে পরীক্ষায় বসতে হয়। এতে ফলাফল খারাপ হচ্ছে।

আরো পড়ুন: সেশনজটে নাকাল রাবির ৫৬ বিভাগ, চাপে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা

ঝুকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসীন কবির বলেন, কলেজের তিনটির মধ্যে দু’টিই ঝুকিপূর্ণ ভবন। এর মধ্যে নতুন যে ভবনটি ঝুকিপূর্ণ, তা করা হয়েছিল বিএনপি সরকারের আমলে। সেসময় ভবনটি ছয় তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে তিন তলা সম্পন্ন করা হয়েছিল। আমি আসার পর ক্লাস সংকট থাকার কারণে চেয়েছিলাম ওপরে আরও দু-তিন তলা বাড়ানো যায় কিনা। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম ভবনটিতে আর বাড়ানো হলো যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। তাই বাড়ানো সম্ভব হয়নি। আরেকটি যে পুরাতন ভবন রয়েছে তা আরও বেশি ঝুকিপূর্ণ। 

নতুন করে কোনো ভবন হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের চিঠি দিয়ে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়ে দিয়েছি। নতুন ভবনের বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আশা করি, খুব শিগগিরই আমরা একটা সুখবর পাবো।