কুবিতে চাকরির দাবিতে উপাচার্যের সাথে ছাত্রলীগের দুর্ব্যবহার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বিরুদ্ধে উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের দপ্তরে ঢুকে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। চাকরির দাবিতে দুই দফা নেতা–কর্মীদের নিয়ে উপাচার্যের সাথে দেখা করতে যান তিনি।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ও বেলা ২টায় তিনি উপাচার্যের দপ্তরে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক। এ ঘটনায় বিব্রত হন তারাও।
আরও পড়ুন: জাবি শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
জানা যায়, আজ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া উপাচার্যের দপ্তরে যান। তিনি উপাচার্যকে ছাত্রলীগের নেতাদের চাকরি দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এ নিয়ে তাদের অনেকক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সাফ জানিয়ে দেন, মেধার ভিত্তিতে পরীক্ষা দিয়ে যারা উত্তীর্ণ হবেন, তাঁরাই চাকরি পাবেন। অতঃপর ছাত্রলীগের সভাপতি উপাচার্যকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বললেও চাকরি দেবেন না?’ উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নীতিমালার বাইরে চাকরির জন্য বলবেন, এটা আমি বিশ্বাস করি না। বিশ্ববিদ্যালয় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, আইনের মধ্যে চলে। ছাত্রলীগের কেউ যদি মেধা দিয়ে আসে, অবশ্যই নিয়োগ বোর্ড তাঁকে চাকরি দেবে। কিন্তু চাপ দিয়ে, দুর্ব্যবহার করে চাকরি আদায়ের চেষ্টা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ পরে তারা বের হয়ে আসেন। এরপর দুপুর ২টায় তারা আবার উপাচার্যের কক্ষে ধুকে উচ্চবাচ্য করেন।
এব্যাপারে ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের চাকরির জন্য উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, চাকরি দিতে পারবেন না। এ নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, একদল লোক উপাচার্যের দপ্তরে ঢুকে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এতে আমি প্রচণ্ড বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি।
উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন জানান, চাকরির দাবি নিয়ে দুই দফা তাঁর দপ্তরে আসেন ইলিয়াস। ইলিয়াস তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ করেন। তিনি বলেছেন, মেধার ভিত্তিতে চাকরি হবে। আবেদনকারীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে চাকরি পাবেন। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে নিয়োগ বোর্ড চাকরি দেবে। এখানে চাপ দিয়ে কিছু করা যায় না। আগেও তাঁরা চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৮ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া। তাঁর ছাত্রত্ব এবং কমিটি উভয়ের মেয়াদ শেষ। তারপরেও তিনি হলে থাকেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ আছে।