১৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫:০৫

ব্রাজিল সব বিশ্বকাপে ফেভারিট, এবারের কাপটা মেসির হাতেই উঠুক

বিশ্বকাপ নিয়ে জবি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা  © টিডিসি ফটো

বিশ্বজুড়ে এখন ফুটবল বিশ্বকাপের আমেজ। আগামী ২০ নভেম্বর বিশ্বকাপ ফুটবলের পর্দা উন্মোচন হবে কাতারের বৃহত্তম শহর আল-খোরের আল বায়াত স্টেডিয়ামে। নিঃসন্দেহে ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর হলো বিশ্বকাপ ফুটবল। প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর আসর বসে বিশ্বকাপ ফুটবলের। শিক্ষার্থীরা একই দলের সমর্থকদের নিয়ে করেন কমিটি, মেতে উঠে নিজ দলের পতাকা টানানোর উৎসবে। সব মিলিয়ে ক্যাম্পাসে সৃষ্টি হয় বিশ্বকাপ উন্মাদনা। 

এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করছে কাতার। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তাপ ছড়াচ্ছে আমাদের দেশেও। ধীরে ধীরে দেশের আনাচে কানাচে সব জায়গা ছেয়ে যাচ্ছে প্রিয় দলের পতাকায়। তবে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে সব সময়ই আলাদা একটা উন্মাদনা কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে। 

ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  শিক্ষার্থীদের ভাবনা জানাচ্ছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি মো সাগর হোসেন। 

ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত খেলা দেখি এবং ব্যক্তিগতভাবে ব্রাজিল দলকে সাপোর্ট করি। প্রতিটি বিশ্বকাপেই ব্রাজিল ফেভারিট হিসেবে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। 

ব্রাজিল এবার তারুণ্য নির্ভর দল হিসেবে কাতারে যাচ্ছে, সেটা তাদের ২৬ জনের স্কোয়াড দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ব্রাজিল কোচ তিতে তারুণ্যকে প্রাধান্য দিলেও স্কোয়াডে থিয়াগো সিলভা, দানি আলভেস ও নেইমার জুনিয়র এর মতো অভিজ্ঞদেরও স্কোয়াডে রেখেছেন। যা একটা ব্যালেন্সড দল হিসেবে গড়ে উঠেছে।

ব্রাজিলের স্কোয়াডে থাকা খেলোয়ারেরা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে যে পারফরমেন্স দেখিয়েছেন, তার ৬০-৭০% খেলতে পারলেও ব্রাজিলের হেক্সা মিশন সম্পন্ন হবে বলে মনে করি। 

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপকে ঘিরে জবিতে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের উম্মাদনা 

ব্রাজিলের পাশাপাশি পর্তুগাল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্স কে আমি কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার মনে করি।পর্তুগাল তাদের সেরা খেলোয়ার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর শেষ বিশ্বকাপটা জয়ের মাধ্যমেই রাঙিয়ে রাখতে চাইবে।অন্যদিকে ক্লাব ক্যারিয়ারে সফল আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসিরও সম্ভবত এটা শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে তারাও ২০১৪ সালের দূঃখের স্মৃতি কাটিয়ে আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির দীর্ঘদিনের শিরোপা খরা কাটাতে চাইবে। 

একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমসের সাজিদা নাজনীন মীম বলেন, ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ফিফা দ্বারা আয়োজিত চতুর্বাষিক আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা ২০২২। যেখানে প্রতিযোগিতা করবে সেরা ৩২ টি দল। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেলো ফুটবল সাপোর্টারদের উচ্ছলতা। দল নিয়ে কথার লড়াইয়ে বাদ যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল প্রেমী সহপাঠীরাও, নিজ নিজ দলকে সাপোর্ট করা নিয়ে বিরাজ করে এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটিও ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ নিয়ে আয়োজন করছে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা যা ফুটবল প্রেমিক বিতার্কিকদের জন্য সৃষ্টি করছে এক চাঞ্চল্যকর পরিবেশ। পছন্দের দলটির জার্সি পরার বা কিনার মধ্যেও সমর্থকদের আগ্রহের অন্ত নেই।

প্রতিটি বাসা বাড়ির ছাদ ছেয়ে যায় অংশগ্রহনকারী দেশগুলোর রঙ-বেরঙের পতাকায়। এমনকি সমর্থক হিসেবে পছন্দের দলটির পতাকার রঙে নিজ ভবন রং করার নজিরও রয়েছে। এইতো গত পরশুদিন সদরঘাটে কয়েকটি লঞ্চেও দেখলাম উপরে বাংলাদেশের পতাকার মানকে অক্ষুণ্ণ রেখে নিচে আর্জেন্টিনার পতাকা টানানো যা অবচেতন মনকেও স্মরণ করিয়ে দেয় চলে এসেছে বিশ্বকাপ ফুটবল। চারবছর পর আবারো সকল ফুটবল প্রেমিকদের মাতিয়ে দিতে বিশ্বকাপের উন্মাদনায়। 

একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মোঃ শরিফুল ইসলাম (শ্রাবণ) বলেন, উল্লাস, মাতামাতি আর হৈ চৈ-ই মেতে উঠেছে দেশ হতে দেশান্তরে, হ্যাঁ বলতেছি বিশ্বকাপের কথা। ফিফা বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে যতসব উল্লাস চারদিকে বাহারী রং-বেরঙের পতাকার খেলা, যেখানে একটু লক্ষ্য করলে বুঝা যায় বিশ্বকাপের জনপ্রিয় দুইটি দল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকার সমবেত। 

এই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ভক্তদের হৃদয়ে যতসব উম্মাদনা, আর এই উম্মাদনা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রাজিল ভক্তরা আনন্দ মিছিল করেছে যেখানে সমর্থকরা  আশাবাদী এইবারের বিশ্বকাপটি ব্রাজিলের মাঠেই যাবে। 
অন্যদিকে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ও মেসির শেষ বিশ্বকাপটি আর্জেন্টিনাই হবে। 

এইছাড়াও বিশ্বকাপের বাকি দলগুলোর সামর্থকদের উন্মাদনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সর্বত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে যার মধ্যে রয়েছে জার্মান, ফ্রান্স, স্পেন, মেক্সিকো, জাপান।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তানভীর হাসান বলেন, ফুটবল বিশ্বকাপকে বলা হয়ে থাকে, ‘বিগেস্ট শো অন দ্য আর্থ’। সারা পৃথিবীতেই এই বিশ্বকাপকে ঘিরে উন্মাদনা কাজ করে। আমাদের দেশেও এই উন্মাদনা কম নয়, বরং অনেকক্ষেত্রে তা অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর থেকেও বেশি।

আরও পড়ুন: এই প্রজন্ম আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় দেখবে না: জয়

বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও থেমে নেই এই উন্মাদনা। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্বকাপের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যেই ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। যারা বিগত কয়েক বছর ধরে দলটির উপর চোখ রেখে আসছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কতটা শক্তিশালী দল কাতারে খেলতে এসেছে এবার।

এ দলটির একমাত্র উদ্দেশ্য বিশ্বকাপ ঘরে তোলা। দুই বছর ধরে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল কোন ম্যাচ হারেনি। একটানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জেতার রেকর্ডও করেছে দলটি। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া খুব একটা কঠিন হবে না। একজন আর্জেন্টাইন সমর্থক হিসেবে আমি সবসময় চাই কাপটা মেসির হাতেই উঠুক।