বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানই হওয়া প্রয়োজন গবেষকের মূল লক্ষ্য: ভিসি মশিউর রহমান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৩৫ PM , আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৩৫ PM
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানই গবেষকের মূল লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন। কারণ একজন গবেষককে নির্মোহভাবে গবেষণা কার্যক্রম করতে হয়। গবেষণায় কোনো পক্ষপাতিত্বের স্থান নেই।’ আজ রবিবার (১৩ নভেম্বর) গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিএ, এমএএস, এমফিল, এমফিল লিডিং টু পিএইচডি ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তিকৃত গবেষকদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
নতুন গবেষকদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, একটি বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে গবেষণার বিকল্প নেই। একজন গবেষক ভাবাবেগ দ্বারা পরিচালিত হবে না। বরং বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে সে পরিচালিত হবে। কোনো দল-মত-পক্ষ নয়, প্রযুক্তির পক্ষে, বিজ্ঞানের পক্ষে, অনুসন্ধানের পক্ষে, সত্যের পক্ষে প্রগাঢ় যে জায়গাগুলো সেখানে গবেষকের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। একজন প্রকৃত গবেষককে অনেকের কাছে অনেক সময় অপ্রিয় হতে হয়। কারণ গবেষককে সত্যানুসন্ধান, প্রকৃত বাস্তব অনুসন্ধানের যে ক্ষেত্রগুলোয় বিচরণ করতে হয়, তার সঙ্গে রয়েছে জ্ঞানের নিবিড় সম্পর্ক। আমাদের অনাবিষ্কৃত যে বাংলাদেশ রয়েছে, সেখানে গবেষণার চোখ নিবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। নতুন গবেষকদের পদচারণায় ক্যাম্পাস যেমন মুখরিত হবে, তেমনিভাবে তাদের চিন্তনে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় আরও সমৃদ্ধ হবে। সেটি গ্রন্থাগারে, আলোচনায়-সবখানে।
গবেষণার উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি উল্লেখ করেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, নতুন গবেষকদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময়ের জন্য বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষক নিয়ে ওয়ার্কশপ, সেমিনারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এসবের মাধ্যমে নতুন গবেষকরা সমৃদ্ধ হবে। উন্নত গবেষণার অনুসঙ্গ খুঁজে পাবে। নব নব জ্ঞান সৃষ্টি হবে। গবেষণার জন্য পদ্ধতি এবং তত্ত¡- এই দু’টো বিষয় খুবই জরুরি। থিওরি এবং ম্যাথোডোলজি সম্পর্কে গবেষককে ভালো জানতে হবে। তাদের সামনে এর পদ্ধতিগত জায়গাকে আরও স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট করা জরুরি। গবেষণা বিনিময়ের ফলে নতুন গবেষকরা এগুলো ভালোভাবে আত্মস্থ করতে পারবে। গবেষকের অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করতে হবে। তানাহলে গবেষণা একটি বইয়ের বাইন্ডিং এ সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। অন্যান্য পেশার সঙ্গে গবেষণার কোনো পার্থক্য থাকবে না। অন্যান্য পেশায় ভাবাবেগ থাকতে পারে, পক্ষপাতিত্ব থাকতে পারে। কিন্তু গবেষণায় এর কিছুই থাকবে না। ক্রমাগত অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে গবেষক সত্য তুলে আনবে।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও বলেন, আমরা যে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছি এর আমূল পরিবর্তন চাই। আর আমূল পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার হচ্ছে অহর্নিশ পরিশ্রম করা। আমূল পরিবর্তনের প্রধান শর্ত ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়াকে উপেক্ষা করে সমাজের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। আত্মোৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমুখী সমাজ বিনির্মাণই আমাদের মূল লক্ষ্য।’ ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিএ, এমএএস, এমফিল, এমফিল লিডিং টু পিএইচডি ও পিএইচডি কোর্সে ১০০ জন গবেষক উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেমের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মনিরুজামান শাহীন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানগণ।