সিত্রাংয়ে উপড়ে গেছে ঢাকা কলেজের গাছ, ৯০ পরিবার পানিবন্দি
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর আঘাতে টানা বৃষ্টি ও প্রচন্ড ঝড়ে রাজধানীর ঢাকা কলেজে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাতাসে উপড়ে পড়েছে প্রায় দশটির অধিক বড় গাছ। টানা বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতার। পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন কর্মচারী কোয়ার্টারের প্রায় ৯০টি পরিবার।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে ঢাকা কলেজ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়। প্রশাসনিক ও একাডেমিক এরিযার চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে আবাসিক এলাকায়। আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস, উত্তর ছাত্রাবাসের সামনে পানি জমে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতার।
সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন কর্মচারী কোয়ার্টারের ৯০টি পরিবারের প্রায় একহাজার সদস্যরা। তারা জানান, সারাদিনের বৃষ্টিতে তেমন কোন সমস্যা না হলেও রাতের প্রচন্ড বৃষ্টি ও বাতাসে ঘরের ভেতর পানি ঢুকেছে। প্রচন্ড বাতাসে ঘরের উপর গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। ফলে সারারাত আতঙ্ক নিয়ে নির্ঘুম পানি বন্দি অবস্থায় রাত কাটাতে হয়েছে। সবার ঘরেই হাঁটু পরিমাণ পানিতে নষ্ট হয়েছে অসংখ্য জিনিসপত্র।
আরও পড়ুন: উপকূলের মানুষগুলোর পাশে আসলেই কেউ নেই
ঢাকা কলেজের অফিস সহায়ক মশিউর রহমান বলেন, স্টাফ কোয়ার্টারে এমন কোন ঘর বাকি নেই যেখানে পানি ওঠেনি। সারারাত আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। সবাই ঘরের পানি নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ঘুম খাওয়া-দাওয়া কোন কিছুই নেই। আপাতত আর যদি বৃষ্টি না হয় তবুও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। আর যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না।
নজরুল ইসলাম নামের এক কর্মচারী বলেন টানা বৃষ্টিতে আবাসিক কোয়ার্টারে পানি উঠেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছি। এমন অবস্থা আগে কখনো সৃষ্টি হয়নি। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবো।
অপরদিকে আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, পানি নিষ্কাষণের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা কলেজের পানি নিষ্কাশনের জন্য যে লাইনটি ছিল সেটি বিজিবি বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে এই মুহূর্তে ঢাকা কলেজ থেকে পানি বের হওয়ার তেমন কোনো জায়গা নেই। তাই ভারী বৃষ্টি হলে ঢালু জায়গা থেকে নিচু জায়গায় পানি গড়িয়ে জলাবদ্ধতা সহ নানা সমস্যার তৈরি হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে কলেজ প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।
জুয়েল মৃধা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা। নানা কারণেই ঢাকা কলেজ থেকে পানি বের হওয়ার যে কয়টি লাইন ছিল সেগুলো এখন সচল নয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সমাধান করা।
এসব বিষয়ে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আমরা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।