ইবি ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় ছাত্রী বহিষ্কার
ছাত্রী হলের সিটে শিক্ষার্থী তুলতে ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ও জুনিয়র ছাত্রী সায়মা রহমানকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে খালেদা জিয়া হল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছেন হল প্রভোস্ট।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে হলের প্রভোস্ট এবং প্রভেস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা সাথী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, হলের হাউজ টিউটর সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা, নাজমুল হুদা ও নাহিদা আক্তার। এদিকে আন্দোলনরত ১৩ জন ছাত্রীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ এনে প্রভোস্ট বরাবর পাল্টা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জুনিয়র ছাত্রী সায়মা রহমান। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল কর্তৃপক্ষ।
আজ শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন হল প্রশাসন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুইয়া, হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সহকারী প্রক্টর, আবাসিক শিক্ষকরা এবং ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগামী বছর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে নতুন ১২টি কোর্স
এ সময় তদন্ত কমিটি গঠন ও জুনিয়র ছাত্রী সৈয়দ সায়মা রহমানকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের কথা জানান ট্রেজারার। সেই সঙ্গে আগামীকাল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বসে রবিবারের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন তিনি। এ ছাড়া হলের প্রভোস্ট অভিযুক্ত ছাত্রকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
জানা যায়, ছাত্রলীগের রেফারেন্সে খালেদা জিয়া হলের ২০৪ নং কক্ষে জানালার পাশে সিটে উঠতে চায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা সাইমা রহমান। ২০৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সিনয়র শিক্ষার্থী পপি আক্তার তাকে দরজার পাশের বেডে থাকতে বলেন। এরপর ওই শিক্ষার্থী তার পরিচিত ছাত্রলীগের বড় ভাই শাহীন ও হাফিজকে বলেন। এরপর বিকেলে শাহীন, হফিজ, মাসুমসহ অন্যান্য কর্মীরা পপি ও তার বন্ধুকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে খালেদা জিয়া হলের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। আন্দোলন চলে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এবং হলের প্রভোস্ট এসে আলোচনায় বসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে আন্দোলনে স্থগিত করেন তারা।
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানে হলের দেড়শতাধিক ছাত্রীর স্বাক্ষরসহ সায়মার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে তার সিট বাতিলের দাবি করে ও হেনস্তার অভিযোগে অভিযুক্ত বিচারের দাবি করেছে। আমরা সায়মাকে হল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং হেনস্তার অভিযোগ থাকা ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির নিকট সুপারিশ করেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তের জন্য প্রক্টরিয়াল বডির নিকট হস্তান্তর করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামীকাল হস্তান্তর করবেন বলে জানতে পেরেছি। তদন্তের দায়িত্ব আমাদেরকে দিলে আমরা পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করব।