সাংবাদিকদের সাথে কথা বললেন না ইডেন কলেজ অধ্যক্ষ, গেটে তালা 

প্রশাসনিক ভবনের গেট বন্ধ করে দেন
প্রশাসনিক ভবনের গেট বন্ধ করে দেন   © টিডিসি ফটো

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যকার চলমান কোন্দলে ক্যাম্পাসের সার্বিক অবস্থা ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচ্যার্য্য। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর)  দুপুর ২ টায় সাংবাদিকরা অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে একাডেমিক ভবনের প্রবেশ গেটে তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ এসময় দূরে একাডেমিক ভবনের সামনে কয়েকজন শিক্ষককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

সাংবাদিকরা শিক্ষকদের অনুরোধ করে বারবার ডাকার পর গেটের পাশে আসেন ইডেন মহিলা কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর মো. জিয়াউল হক৷  তিনি বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ফোরামে কথা বলেছি৷ অধ্যক্ষের বাধ্যবাধকতার কারণে তিনি কথা বলতে পারবেন না৷ আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের) অন্য একদিন ডেকে কথা বলবেন। 

এসময় তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

আরও পড়ুন: ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে অবাঞ্চিত ঘোষণা

কত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বা কতদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন জাবাব না দিয়ে তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন৷

এরআগে, ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিচার দাবি সহ মোট ১১ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ। এসময় তারা ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো -

১. ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের উপস্থিতিতে সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীর উপর অতর্কিত হামলার বিচার চাই  কলেজ প্রশাসনকে করতে হবে৷ 
২. সাধারণ মেয়েদের সাথে পূর্বে ও বর্তমানে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে। 
৩. সাধারন শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।
৪. গণহারে প্রায় শতাধিক রুম দখলের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।  
৫. ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে কটাক্ষ করে কথা বলার জবাব দিতে হবে৷ 
৬. ছাত্রীহলের ক্যান্টিতে একচেটিয়া চাঁদাবাজি ও একচেটিয়া রাজনীতি বন্ধ করতে হবে৷ এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে৷ 
৭. ক্যাম্পাসের কোন সিসিটিভি ফুটেজ লুকানো যাবে না৷ সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ তদন্ত কমিটিকে দিতে হবে৷
৮. অবৈধভাবে যে ওয়াইফাই সংযোগ কলেজে প্রবেশ করানো হয়েছে তা অবশ্যই প্রশাসনের মাধ্যমে বের করে দিতে হবে৷ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক যে পরিমাণ অর্থ নিয়েছেন তা সম্পূর্ন ফেরত  দিতে হবে৷ সেখানে ইডেন কলেজের বাকী ৪২ জন নেত্রীর এবং কলেজ প্রশাসনও উপস্থিত থাকবে৷ 
৯.জান্নাতুল ফেরদৌসীর যে আপত্তিকর ছবি তোলা হয়েছে তা প্রশাসনের সামনে মুছতে হবে৷ 
১০. বঙ্গমাতা হলের ১১ তলায় যে রুম দখল আছে তা উদ্ধার করতে হবে৷ 
১১. সহ সভাপতি মিম ইসলাম যে কিনা সভাপতির অনুসারী  এবং সহ সভাপতি রোকসানার মেয়েদের সাথে অত্যাচার করেছে তার বিচার করতে হবে৷

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কোন্দলে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত এগারোটার দিকে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে  উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। জানা গেছে,  ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই কোন্দলে জড়িয়ে পরে উভয় পক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ