বয়স আছে যতদিন, বিসিএসে অংশগ্রহণ করে যাব ততদিন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান এমএইচ ফয়সাল, পেশায় তড়িৎ প্রকৌশলী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আঞ্চলিক ভাষায় বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। মানুষের কাছে ‘সরল ভাই’ নামেই বেশি জনপ্রিয়। ফেসবুক পেইজ ‘সরল ভাই’ এর মাধ্যমে মজার এসব কন্টেন্টে হাজারো শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছে তার।
সম্প্রতি ৪৪তম বিসিএস-এর প্রিলিমিনারিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন বিসিএসে অংশ নেওয়ার নানা অভিজ্ঞতা। মজার ছলে একটি ভিডিও কন্টেন্টে জানিয়েছেন, ‘বয়স আছে যতদিন, বিসিএসে অংশগ্রহণ করে যাব ততদিন!’ এতে হাজারো শুভাকাঙ্ক্ষী সরল ভাইয়ের সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনেছেন।
সেই ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বলছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, বয়স আছে যতদিন আমি বিসিএস দিয়ে যামু ততদিন। আমি একজন বিসিএস যোদ্ধা। বয়স থাকতে আমি কোনদিন বিসিএস থেকে পিছপা হবো না। বিসিএস বিমুখী হমু না। বিসিএস থেকে আমি দূরে সরে যামু না। এ আমার অঙ্গীকার, এ আমার প্রতিজ্ঞা।’
তিনি আরও জানান, আজকে ৪৪তম বিসিএস-এর প্রিলিমিনারি দিয়ে মাত্র বের হলাম। মাত্র বের হয়ে একটু সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে আসছিলাম, একটু বাতাস খাইতাম আরকি। যে গরম পরা পড়ছে, বাতাস খাইতে খাইতে দুই-তিনটা আরকি কথা কই। বিসিএস হইতাছে একটা অভিজ্ঞতার খেলা। আপনি প্রথম প্রথম যখন বিসিএসে অংশগ্রহণ করবেন তখন ডর লাগবো, ভয় লাগবো। বিসিএস নিয়ে প্রচুর সিরিয়াস থাকবেন। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা আপনি বই নিয়ে পইড়া থাকবেন। এইটা আমিও করছি। যখন নাকি ৩৮তম বিসিএস থেকে শুরু করছি। ৩৮তম বিসিএস থেকে শুরু করে ওহন ৪৪তম পর্যন্ত দিছি। এই নিয়া ৫বার অংশগ্রহণ করছি। প্রথম দিকে পড়তে পড়তে মুখ দিয়ে ফ্যানা বের করতাম। শেষ পর্যন্ত এসে দেখলাম ফলাফল শূন্য!
আরও পড়ুন : প্রকৌশলী থেকে একজন সফল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘সরল ভাই’
এরপরে আমি ভাবলাম আমি ফেলই করি, তাহলে পড়ে আর লাভ কি। এরপর থেকে পড়াশোনা মোটামুটি বন্ধ কইরা দিছি। তারপরেও গত বিসিএস পর্যন্ত ৪৩ পর্যন্ত বই লইয়া একটা নারাচরা করছি। প্রিলিমিনারিটা একটু আগাইয়া আইলে। এরপর থেকে বই রইছে পশ্চিম দিকে, আমি রইছি পূর্ব দিকে। বইয়ের সঙ্গে আমার দূরত্ব। বইয়ের সঙ্গে আমার দেখা সাক্ষাৎ কিছুই নাই। তারপরেও আমি বিসিএস বিমুখী হই না। বিসিএস এ অংশগ্রহণ করি। আমি কিন্তু বিসিএস ক্যাডার হওয়ার লাইগা বিসিএসে অংশগ্রহণ করি না।
সরল ভাই জানান, আমি অংশগ্রহণ করি কারণ এটাতে অনেক অনেক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এটা একটা অভিজ্ঞতার খেলা। ৪-৫ লাখ মানুষ অ্যাপ্লাই করে, এরপর মধ্যে বিসিএস ক্যাডার হয় দুই হাজার, তিন হাজার! বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু পারেনা। আমি কিন্তু দশের লগে থাকি। ১০ জন যে দিকে আমিও সেই দিকে। দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ!
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে এসএসসি পাসের পর কুমিল্লায় কলেজ জীবন শেষ করে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ থেকে গ্রেজুয়েশন করেছেন এমএইচ ফয়সাল। বর্তমানে সিটি এফএম ৯৬.০ এ সিনিয়র প্রোগ্রাম প্রডিউসার এবং কন্টেন্ট ডেভেলপার হিসেবে কাজ করছেন তিনি।