প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আবেদনে পদে পদে ভোগান্তি চাকরিপ্রার্থীদের
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের আবেদন করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বার বার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে ফি দিতে পারছেন না বলে তারা জানিয়েছেন। গত ৩১ আগস্ট সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামীকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে।
বাবু ইসলাম নামে এক চাকরিপ্রার্থী জানান, প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ২০২৫-এর অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ায় বর্তমানে সারা দেশের আবেদনকারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও আবেদন সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। গভীর রাতে চেষ্টা করলে অনেক সময় আবেদন করা সম্ভব হলেও পেমেন্ট হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘আমিসহ অনেকে তিন-চার দিন ধরে পেমেন্ট করার চেষ্টা করছি, কিন্তু টাকা কাটছে না, পেমেন্টও সম্পন্ন হচ্ছে না। আগামী ২০ অক্টোবর শেষ সময় নির্ধারিত রয়েছে, অথচ সারাদেশের কেউই ঠিকভাবে আবেদন ও পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারছেন না।’
২ হাজার ১৬৯টি পদের জন্য এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য ১১তম গ্রেড এবং প্রশিক্ষণবিহীনদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী এ গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজধানীর এক নারী চাকরিপ্রার্থী জানান, তিনি গত ১৪ অক্টোবর দুইবারের চেষ্টায় প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করতে পারেন। তবে ফি জমা দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। দুদফা মেসেজ দিয়েও ফি জমা হয়নি। তৃতীয়বার মেসেজ দিলেও ফি জমা হওয়া নিশ্চায়নের মেসেজ পাননি। কয়েক ঘণ্টা পর ফি জমা হয়েছে বলে ‘সাকসেসফুল’ মেসেজ আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাফর আলি ও জান্নাতুল সুলতানাও একই ধরনের অভিযোগ করেন।
আবেদনে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে পোস্ট করছেন। চাকরিপ্রার্থী সাইমুম বলেন, ‘আমি মাঝরাতে টাকা পেমেন্টের জন্য মেসেজ পাঠাই। ১ ঘণ্টা পর ফিরতি মেসেজ আসে সকাল ৭টার পর চেষ্টা করুন। তখন আমি ভাবলাম এত রাতে দেওয়ার কারণে হয়তো এমন হয়েছে। পরদিন বিকেলে আবার মেসেজ পাঠাই। ৬ ঘণ্টা পর ফিরতি মেসেজ আসে সকাল ৭টার পর চেষ্টা করুন। পরে আর চেষ্টা করিনি।’
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা অফিসার (মহাপরিচালকের দপ্তর) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়টি পিএসসি দেখছে। তারা এবং টেলিটক বিষয়টি নিয়ে ভালো বলতে পারবে।’ পরে ফোনে পিএসসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি সমাধানে আইটি বিভাগকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি
২ হাজার ১৬৯টি পদের জন্য এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য ১১তম গ্রেড এবং প্রশিক্ষণবিহীনদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী এ গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবেদন করতে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি এবং শিক্ষা জীবনে কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএ অথবা তৃতীয় শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
এ নিয়োগের পরীক্ষা লিখিত টাইপের হবে। ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী) থাকবে। লিখিত পরীক্ষার পাসের সর্বনিম্ন নম্বর ৫০ শতাংশ। এছাড়া মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীগণ মৌখিক পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।