স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না পিএসসি, পেছাবে সব নিয়োগের ফল
চাকরিপ্রার্থীদের একের পর এক আন্দোলনের কারণে থমকে গেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সকল কার্যক্রম। আন্দোলনকারীদের হুমকির ফলে নিয়মিত অফিস করতে পারছেন না কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সদস্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। এতে করে এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। এর ফলে চলমান বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা ও এর ফলাফল পেছানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারে পদত্যাগের পর থেকে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর, ৩৯তম বিসিএসের চিকিৎসকরা, ৪১তম ও ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের প্রার্থীরা পিএসসি’র সামনে লাগাতার আন্দোলন করেছেন। এসব প্রার্থীদের দাবি একাধিকবার শুনেছে পিএসসি। অনেকে ইতোমধ্যে আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগপ্রত্যাশীরা এখনো আন্দোলন চলমান রেখেছেন।
সরেজমিনে আজ মঙ্গলবার পিএসসিতে গিয়ে দেখা যায়, পিএসসির মূল ফটকের ভেতরের সিঁড়িতে বসে অবস্থান করছেন ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগপ্রত্যাশীরা। এভাবে প্রার্থীদের আন্দোলনের কারণে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে অফিসে ঢুকছেন পিএসসি’র কর্মকর্তারা। হামলা আতঙ্কে তারা দীর্ঘ সময় পিএসসিতে অবস্থান করছেন না।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পিএসসি’র উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সরকার যেভাবে চাহিদা দেয়, সে অনুযায়ী পিএসসি নিয়োগ সুপারিশ করে। ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে যতজনকে সুপারিশ করার চাহিদা পাঠানো হয়েছিল, ততজনকেই পিএসসি সুপারিশ করেছে। অতিরিক্ত কোনো চাহিদা না থাকলে পিএসসি কীভাবে তাদের সুপারিশ করবে? আমরা প্রার্থীদের বিষয়গুলো বার বার বুঝিয়েছি। তবে তারা এটি কোনোভাবেই বুঝতে চেষ্টা করছেন না। তাদের আন্দোলনের কারণে পিএসসির সব কার্যক্রম থমকে রয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ৩৯, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসের প্রার্থীদের বিষয়গুলো নিয়ে পূর্ণ কমিশন সভায় আলোচনা হয়েছে। তারা যে দাবিগুলো করেছে, সেগুলো আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামীকাল বুধবার আমাদের একটি বিশেষ সভা ডাকা হয়েছে। এ সভায় আরও বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করা হবে। এরপর সবগুলো একত্রিত করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় যদি তাদের নিয়োগ সুপারিশের কথা বলে, তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের নিয়োগ সুপারিশ করবো। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার বাইরে কোনো কাজ করার এখতিয়ার পিএসসির নেই।
পিএসসি’র একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ আগস্ট ৩৯, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসের প্রার্থীরা পিএসসিতে এসেছিলেন। পরবর্তীতে আন্দোলকারীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেন পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন। এ সময় পিএসসি’র একাধিক সদস্যও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থীদের সকল দাবি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার আশ্বাস দেন তিনি। চেয়ারম্যানের আশ্বাস পেয়ে ৩৯তম ও ৪১তম বিসিএসের প্রার্থীরা পিএসসি কার্যালয় ছেড়ে চলে যান। তবে ৪৩তম বিসিএসের প্রার্থীরা হট্টগোল করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আন্দোলনের অধিকার সবার রয়েছে। তবে পিএসসি আইনের বাইরে কোনো কাজ করবে না, করার সুযোগও নেই। প্রার্থীদের দাবি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দেবে, আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।