পিএসসি’র কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আওতাধীন বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর সংস্থাটির কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এজন্য বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। যদিও বিষয়টিকে রুটিন কাজের অংশ বলে জানিয়েছে পিএসসি।
পিএসসি’র একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রশ্ন প্রণয়নকারীদের প্রশ্ন জমা দেওয়া, নন-ক্যাডারের পাণ্ডুলিপি ভল্টে রাখা, পিএসসি’র রিসিপশন মূল ভবনের বাইরে নেওয়া, সোনালি ব্যাংকের কার্যক্রম নির্দিষ্ট জায়গায় করাসহ একাধিক বিষয় সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার সম্ভাবনা কমে যাবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পিএসসি’র শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগে প্রশ্নকারক পিএসসি কর্মকর্তাদের কাছে প্রশ্ন হাতে লিখে জমা দিতেন। এরপর সেই প্রশ্ন পাণ্ডলিপি আকারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের রুমে রাখা হত। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রশ্নকারকদের সরাসরি সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কাছে প্রশ্ন জমা দিতে হবে। পিএসসি’র কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত থাকবেন না।
আগে কেবলমাত্র ক্যাডার পদের পরীক্ষার প্রশ্নের পাণ্ডুলিপি ভল্টে রাখা হত। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডার পদের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদের পরীক্ষার প্রশ্নও ভল্টে রাখা হবে। অর্থাৎ প্রশ্নকারকগণ সদস্যদের কাছে প্রশ্ন জমা দেবেন, এরপর সদস্যদের কাছ থেকে প্রশ্ন সরাসরি ভল্টে যাবে। পরবর্তীতে সেই প্রশ্ন নির্ধারিত সময়ে মুদ্রণের জন্য পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, পিএসসি’র রিসিপশন এড়িয়া মূল ভবনের ভেতরে অবস্থিত। অনেকে কোনো কারণ ছাড়াই এখানে এসে ঘোরাঘুরি করেন। এটি বন্ধে পিএসসি’র রিসিপশন মূল ভবনে প্রবেশের গেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে যারা পিএসসি’র ভেতরে প্রবেশ করবেন তাদের একটি তালিকা আমাদের কাছে থাকবে। বহিরাগত কেউ কার কাছে যাচ্ছেন সেটিও বোঝা যাবে।
তিনি জানান, পিএসসি যে প্রক্রিয়ায় প্রশ্নপত্র তৈরি, পরীক্ষা গ্রহণ এবং মৌখিক পরীক্ষা নেয়, তাতে কোনো সমস্যা ছিল না। তবে যেহেতু প্রশ্নফাঁসের একটা অভিযোগ উঠেছে, সেহেতু সবকিছু ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করা হচ্ছে, যেন আগামী ৫০ বছরেও পিএসসি’র কার্যক্রম নিয়ে কোনো প্রশ্ন না ওঠে।
পিএসসি’র এ শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যারা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলেছেন, তাদের অনুসন্ধানে নানা ঘাটতি রয়েছে। এগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা দরকার। কোনো প্রকার তদবির এবং অনিয়ম ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পিএসসি তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই সংস্থাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিতর্ক থেকে বের হতে যা যা করার পিএসসি তাই করবে।
তিনি আরও জানান, পিএসসিসহ বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে, যারা অভিযোগ তুলেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।