১৯ অক্টোবর ২০২২, ১১:০৩

বিসিএসে টিকেও অনিশ্চয়তায় আট হাজার চাকরিপ্রার্থী

পিএসএসসি  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত চাকরি বিসিএস ক্যাডার হওয়া। লাখো চাকরিপ্রার্থী জীবনের অনেক মূল্যবান সময়, শ্রম ও মেধা দিয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য লড়াই করেন। তবে, দুর্ভাগ্যবশত একটি বিসিএসের আবেদন থেকে শুরু করে নিয়োগপ্রাপ্তির জন্য লেগে যাচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর। ফলে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন সুপারিশ প্রাপ্তরা। ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পায়নি এমন ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। 

নিয়মানুযায়ী, এতদিন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু ৪০ তম বিসিএস এর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৯ ই সেপ্টেম্বর , ২০১৮ পর্যন্ত সকল শুন্য পদে নিয়োগ হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন ২০১৮-২০২২ পর্যন্ত নিয়োগের ধারা অব্যাহত ছিল বলে শুন্য পদের বেশির ভাগেই জনবল নিয়োগের সুপারিশ হয়ে গেছে ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে শুরুর দিকে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে চালু হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হয়েছে। সবাই একসঙ্গে অফিসে যেতে পারেননি। মৌখিক পরীক্ষার সময় করোনা বেড়ে গেলে কার্যক্রম দফায় দফায় স্থগিত রাখতে হয়েছে। এভাবে ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে। এরই মধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে করোনা মোকাবিলায় ৪২তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ৪ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তখন ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রমের গতি কিছুটা থেমে যায়।

সর্বশেষ ৩৮ তম বিসিএসের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগেছিল ৩ বছর ৭ মাস। অথচ ৪ বছর পেরিয়ে ৫ বছরে পা দিলো ৪০ তম বিসিএস। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এক প্রকার হাঁপিয়ে উঠেছেন গেজেট প্রত্যাশীরা। 

আরও পড়ুন: পরীক্ষকদের ভুলের স্বীকার ৪১তম বিসিএস

সুপারিশ পেয়ে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা কয়েকজন বলেন, রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে এই বিসিএস। কিন্তু এর মাধ্যমে একজন প্রার্থীর নিয়োগ পেতে ৪ বছরের বেশি লেগে যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল টেস্টে এতো বেশি সময় লাগছে, যা মোটেও কাম্য নয়। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আশা রাখি, যাতে তারা এই প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সফলভাবে শেষ করতে পারেন।

আক্ষেপ করে তারা বলেন, আমরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। টিউশনি খুঁজছি, তাও পাচ্ছি না। আর বড় কথা ৪ বছর পার করে ৫ বছরে পা দিল, যা অনার্স পাস করতে লাগে। যেই চাকরিতে ২৭/২৮ বছরে যোগ দেওয়ার কথা, সেই চাকরিতে ৩০-এর কোঠায় যোগ দিব।