১৬ অক্টোবর ২০২২, ১৪:৪৪

পিএসসির সিদ্ধান্তে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের অধিকার

৬ দফা দাবিতে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের সমাবেশ  © সংগৃহীত

ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ৪০ তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার তালিকার অপেক্ষমান প্রার্থীরা সমাবেশ করেন। নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নতুন নিয়মে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছে প্রার্থীরা। নতুন নিয়ম চালু হলে ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় কম সংখ্যক পদে নিয়োগ ও নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।

রোববার (১৬ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ‘বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার ও চাকরিপ্রার্থী ছাত্রসমাজের’ ব্যানারে ডাকা এই মানববন্ধনে কয়েক শ ব্যক্তি অংশ নেন। অবিলম্বে ছয় দফা দাবি মেনে নিতে তাঁরা সরকার ও পিএসসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রার্থীরা বলেন, গত কয়েকটি বিসিএসে ক্যাডার পদে নিয়োগের পর উত্তীর্ণ বাকি প্রার্থীদের মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার হিসেবে নতুন আরেকটি বিসিএসের ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত শূন্য পদে পিএসসি নিয়োগের সুপারিশ করত। তবে নতুন নিয়মানুযায়ী চলমান ৪০, ৪১, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে কোন বিসিএসের সময় কোন শূন্য পদের চাহিদা এসেছে, তা পর্যালোচনা করে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে। প্রার্থীরা জানান, তাদের প্রাপ্র্য পদগুলো পরের বিসিএস প্রার্থীদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এতে তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। এতে তাদের নিয়োগ কমে যাবে।

তারা আরও বলেন, বিগত বিসিএসগুলোর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ৪০তম বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের জন্য পিএসসি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে শূন্য পদের তালিকা চেয়ে চিঠি দেয়। ইতিমধ্যে পিএসসিতে শূন্য পদের তালিকা এসেছে, যা প্রকাশের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এসব পদ এখন ৪০তম বিসিএসের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। এতে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ছে তাদের। 

আরও পড়ুন: ৪০তম বিসিএস: নিয়োগের প্রজ্ঞাপন চলতি মাসে

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে নতুন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাডার পদের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদের সংখ্যাও উল্লেখ থাকবে। তবে চলমান ৪০তম, ৪১তম, ৪৩তম ও ৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে কোন বিসিএসের সময় কোন শূন্য পদের চাহিদা এসেছে, তা পর্যালোচনা করে মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।

৬ দফা দাবি

প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো, বিজ্ঞপ্তির পরে ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারি নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের বেকার বিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল, ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে দেওয়ার অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা, যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে, সেই একই প্রক্রিয়ায় বর্তমানে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান, ‘যার যা প্রাপ্য, তাকে তা-ই দেওয়া হবে’—পিএসসির এমন বক্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও বেকারত্ব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করে বেকার বান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং গত এক যুগে পিএসসি যে স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল, সেই ধারা অব্যাহত রাখা।

গত ২৩ আগস্ট পিএসসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের আগে যত শূন্য পদই আসুক, তা একটি বিসিএসে নিয়োগ দিয়ে শেষ করা যাবে না। কোন শূন্য পদ কোন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় এসেছে, তা বিবেচনায় আনতে হবে।