দ্রুতই আলো ছড়াবে আইইউটির ট্যুরিজম বিভাগ
- আইইউটি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২২, ০৫:১৮ PM , আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২২, ০৫:৪৩ PM
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজিতে (আইইউটি) সম্প্রতি টেকনিক্যাল এন্ড ভোকেশনাল এডুকেশন বিভাগের আওতায় ব্যাচেলর অব ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি টেকনোলজি (বিটিএইচটি) নামে নতুন একটি প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। দেশে পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্যুরিজম বিভাগের শিক্ষকদের প্রত্যাশা চাহিদা অনুযায়ী নতুন এ বিভাগ উপযুক্ত শিক্ষার্থী তৈরি সারাদেশে সেবার আলো ছড়িয়ে দেবে।
বিভাগটির শিক্ষকরা বলছেন, ড্যাফোডিল, ঢাবিসহ আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজম এন্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট চালু রয়েছে। এই প্রোগ্রাম থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে শিক্ষার্থীরা ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি ও ট্যুরিজম মিনিস্ট্রিতে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে দেশে-বিদেশে চাকরি করছে। বিটিএইচটি প্রোগ্রামটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য একটি সময়ের উপযুক্ত প্রোগ্রাম।
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি মূলত একটি আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি ও টেকনিক্যাল এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়। তবুও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চাহিদার প্রেক্ষিতে ট্যুরিজম এন্ড হস্পিটালিটি বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। যদিও বিষয়টি কিছুটা ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড তবুও আইইউটিতে বিষয়টি তার স্বকীয়তা ধরে রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
আরও পড়ুন: গুলিয়াখালী সৈকতকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা
বিশ্ববিদ্যালয়টির টেকনিক্যাল এন্ড ভোকেশনাল এডুকেশন (টিভিই) বিভাগের সাবেক প্রধান ড. আবু রায়হান বলেন, প্রোগ্রামটি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা নতুন কোনো প্রোগ্রাম যেমন মেসিন লার্নিং, ক্লাউড কম্পিউটিং বা আইসিটি ইন ইডুকেশনের মত নতুন কোনো টেকনোলজিক্যাল প্রোগ্রাম নয়। ট্যুরিজম প্রোগ্রামটি অনেক পুরোনো এবং একটি ক্লাসিক্যাল প্রোগ্রাম; যেখানে স্মার্ট শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়।
তিনি বলেন, আইইউটির ট্যুরিজম কারিকুলাম উন্নত করার সময় আমরা ইন্টারন্যাশনাল কারিকুলামগুলোকে সামনে রেখে এই প্রোগ্রামটিতে প্রযুক্তিগত দিক অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছি। এ বিভাগ থেকে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে যে ন্যাচারাল ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন এবং ইকো ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন আছে; এই রিসোর্টগুলোর বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট পোষ্টে চাকরির সুযোগ পাবেন এ বিভাগের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা।
ড. আবু রায়হান অভিভাবকদের সহোযোগিতা, শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা এবং অথরিটীর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। যাতে করে নতুন এই প্রোগ্রামটি দ্রুতই আলোর মুখ দেখে।
ওআইসির আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় আইআইইউএম যেটি মালয়শিয়াতে অবস্থিত সেখানেও ট্যুরিজমের ব্যাচেলর প্রোগ্রাম শুরু করেছে। যেটি ট্যুরিজম প্ল্যানিং এন্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট নামে চলছে। অদূর ভবিষ্যতে টপ মোস্ট জব সেক্টরের মধ্যে ট্যুরিজম ৬/৭তম অবস্থানে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান কিছু ইউনিভার্সিটি ট্যুরিজমকে ট্যাকনোলোজির সাথে যুক্ত করে এক নতুন বিস্ময়ের আবিষ্কার করেছে। সেই কারিকুলাম ধরেই আইইউটি নতুন এ বিভাগের কার্যক্রম শুরু করেছে।
ট্যুরিজম নিয়ে বিভাগটির ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের জানান, আইইউটি ইতিমধ্যে এই প্রোগ্রামটি এক বছর সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছে। একইসঙ্গে একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর সম্পন্ন করেছে। প্রথম বছরের প্রথম সেমিস্টার কোভিডের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক কিছু ম্যানেজ করে নিতে পারেনি। কিন্তু অফলাইন ক্লাস শুরুর পর থেকেই ডিপার্টমেন্ট অথরিটি নতুন আঙ্গিকে নতুনভাবে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিটিএইচটি বিভাগের বর্তমান প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ফারুক আহমেদ হাওলাদার জানান, এই প্রোগ্রাম ও প্রোগ্রামের অধীন গ্র্যাজুয়েটদের মান অনন্য উচ্চতায় নেয়ার লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশী ও বিদেশী হোটেলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বর্তমানে এই বিভাগে দেশী এবং বিদেশী শিক্ষকরা পাঠদান করছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ১১ লাখ ৫০ হাজারের মত মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পর্যটন খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ২০২৬ সালে বাংলাদেশে শুধু এ খাতে প্রত্যক্ষভাবেই প্রায় ১২ লাখ ৫৭ হাজার লোক কাজ করবে বলে বিভিন্ন সূচকে উঠে এসেছে। এই লক্ষে দক্ষ জনবল সৃষ্ঠিই হচ্ছে আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।