শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছের সঙ্গে আড়াই হাজার পরিবারের স্বপ্নও শেষ

হাইকোর্ট এ এনটিআরসিএ লোগো
হাইকোর্ট এ এনটিআরসিএ লোগো  © ফাইল ফটো

বগুড়ার সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী তাসনীম তিথি। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন সপ্তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি। সেজন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন আদালতের। হাইকোর্ট তিথিকে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে বললেও গতকাল আপিল বিভাগ তিথিদের মামলা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তিথির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।

শুধু তাসনীম তিথিই নয়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) বৈধ সনদ নিয়েও চাকরি না পাওয়া আড়াই হাজার প্রার্থীর সঙ্গে তাদের পরিবারের স্বপ্নও শেষ হয়ে গেছে। ফলে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এসব চাকরিপ্রার্থীরা।

ভুক্তভোগী চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনটিআরসিএ ১-১২তম নিবন্ধন্ধারীদের যে সনদ দিয়েছিল সেখানে লেখা ছিল ‘শিক্ষক নিয়োগের জন্য যোগ্য’। নিয়োগের যোগ্য হওয়া সত্বেও তাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাদেরকে নিয়োগের হাত থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। সেজন্য তারা হাইকোর্টে রিট করেছেন।

তারা বলছেন, ১৩তম নিবন্ধন থেকে এনটিআরসিএ তাদের সনদের মেয়াদ তিন বছর করে। এছাড়া এই নিবন্ধন প্রার্থীদের সনদে ‘আবেদন যোগ্য’ লেখা হচ্ছে। তবে ১-১২তম নিবন্ধনধারীদের মেয়াদের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। সনদের মেয়াদ তিন বছর উল্লেখ করে এনটিআরসিএ ২০১৮ সালে একটি পরিপত্র জারি করে।

১-১২ নিবন্ধিত প্রার্থীরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের নীতিমালা জারির পূর্বে যারা এনটিআরসিএর সনদ নিয়েছেন তারা ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন এবং নিয়োগ পাবেন। আপিল বিভাগের শুনানিতে এনটিআরসিএ বয়সের বিষয়টি বিচারপতিদের কাছে উল্লেখ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ১-১২তম রিটকারী প্রার্থী হুমায়ুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা নিয়োগ যোগ্য হওয়া সত্বেও এনটিআরসিএ আমাদের নিয়োগ দেয়নি। বরং যারা আবেদনযোগ্য তাদের নিয়োগ দিতে এনটিআরসিএ। এতে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা আদালতে গিয়েছিলাম। তবে গতকাল যে রায় দেয়া হয়েছে তাতে আমাদের শিক্ষক হবার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন,  অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করে এনটিআরসিএর সনদ অর্জন করেছিলাম। সনদ পাওয়ার পর আমার পরিবার ভেবেছিল আমি শিক্ষক হবো। আমার মতো তারাও স্বপ্ন দেখেছিল, তবে আমার মতো তাদের স্বপ্নও শেষ হয়ে গেল। আমার সামনে এখন অন্ধকার বিরাজ করছি। কোন পথ দেখছি না।

এদিকে আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের কপি পাওয়ার পর নিজেদের কর্মসূচি ঠিক করবেন বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ।

তিনি বলেন, আমরা আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের অপেক্ষা করছি। আপিল বিভাগ কোন পয়েন্টে আমাদের কন্টেম্প মামলা নিষ্পত্তি করেছেন সেটি দেখতে হবে। সেটি দেখে আমরা আমাদের করণীয় ঠিক করবো।


সর্বশেষ সংবাদ