ঘোষণা দিয়ে অনশনে সেই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা
লিখিত পরীক্ষা ছাড়া শুধু (ভাইভা) মৌখিক নিয়ে সনদের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সেই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। বুধবার (১৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবিতে এমসিকিউতে উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশরা বিনা পরীক্ষায় আইনজীবী তালিকাভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিল।
এখন তাদের দাবি, শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে আইনজীবী তালিকাভুক্ত করার। আগে লিখিত ও ভাইভা ছাড়াই শুধু এমসিকিউতে উত্তীর্ণদের সনদ দাবি করেছিল আন্দোলনকারীরা। এখন সেই দাবি থেকে সরে এসেছেন।
আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির দাবি জানিয়েছেন ২০১৭ ও ২০২০ সালের এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। এ দাবির ১০০তম দিন উপলক্ষে গত সোমবার (১২ অক্টোবর) থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৩ দিনের অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। মঙ্গলবারেও একই দাবিতে অনশন করেন তারা। আজও (বুধবার) একই দাবিতে অনশন করছেন।
শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা বলেন, প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ৯০ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ৮৭৮ জন প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। করোনার এই সংকট–মুহূর্তে আসন্ন লিখিত পরীক্ষা থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাই করে তালিকাভুক্তির অনুরোধ জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক রায়ে প্রতিবছর একবার করে আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করার জন্য বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেয়া হয়। সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী এই প্রতিষ্ঠানটি আপিল বিভাগের এই রায় কার্যকর করেনি।
তারা বলেছেন, বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ কমিটি (এনরোলমেন্ট কমিটি) আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত। তারাই আপিল বিভাগের রায় না মানছে না।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছর পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও শুধু ২০১৭ সালের ২১ জুলাই এবং ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের এখনও লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়নি। দেশে এখন করোনাভাইরাসের মহামারি চলছে। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়তো সম্ভব নয়। পরীক্ষা নেয়ার পরিবেশ না হলে এই ১২ হাজার ৮৭৮ শিক্ষার্থীকে আইনজীবী হিসেবে সনদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
এই দাবিতে গত ৯ জুন থেকে সারাদেশে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। এই দাবির পক্ষে জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, ১২ হাজার ৮৭৮ শিক্ষার্থীকে আইনজীবী হিসেবে ঘোষণা করে সনদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।