চাকরি হারানোর ভয়ে ঢাকা ফিরছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা

  © সংগৃহীত

করোনা ঝুঁকি সঙ্গে নিয়ে জীবিকার তাগিদে পাঁয়ে হেঁটে, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে ঢাকা ফিরছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। বসে নেই বেসরকারি চাকুরিজীবিরাও। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হলেও আগামীকাল থেকে খুলছে বিভিন্ন গার্মেন্টসসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় মনে করোনা আতঙ্ক থাকলেও বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে ফিরছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। শ্রমিকদের কথা একটাই করোনার ঝুঁকি থাকলেও জীবিকার তাগিদে কর্মস্থরে পৌঁছতেই হবে। না হলে চাকরিটা বাঁচানো যাবে না।

বিভিন্ন গার্মেন্টসের ছুটি শেষ হওয়ায় আজ ঢাকামুখী মানুষের ঢল দেখা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। সবার চোখেমুখে করোনার ভয় স্পষ্টত তবুও তারা জীবিকার পাশাপাশি চাকরিটা বাঁচাতে ছুটে যাচ্ছে সব বাঁধা উপেক্ষা করে। তবে বাধ সেধেছে অঘোষিত লকডাউন। ফলে করোনা মোকাবিলায় সবাইকে ঘরে থাকা আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে নির্দেশনা রয়েছে তার ছিটেফোঁটাও নেই এখানে। অটোরিকশা, সিএনজি কিংবা ট্রাক যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। এ অবস্থায় পুলিশের তৎপরতা থাকলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না।

যান চলাচল বন্ধ জেনেও সকাল বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন রিকশা-অটোরিকশা করে ময়মনসিংহ নগরে আসছেন। তারপর ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ময়মনসিংহ নগর পাড়ি দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিগারকান্দা, শিকারীকান্দা এলাকায় গিয়ে ট্রাক, পিকআপে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। আবার যানবাহন না পেয়ে অনেকে পায়ে হেঁটেই ঢাকার দিকে রওয়ানা দিচ্ছেন। আজ ও গতকাল এ দুদিন ধরেই ঢাকায় ফেরা মানুষের স্রোত দেখা যাচ্ছে।

নাজমা বেগম নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক বলেন, কাল যদি কাজে যোগ দিতে না পারি তবে বেতন পাবো না। আবার এমনও হতে পারে চাকরিটাই আর থাকবে না। তাই যে করেই হোক কর্মস্থলে ফিরতেই হবে।

এনামুল হক ও মনির মিয়া নামের দুজন শ্রমিক অন্তত ১০ কিলোমিটার হেটে ময়মনসিংহের বাইপাস পর্যন্ত এসেছি। গাড়ি না থাকায় অনেক কষ্ট করে আমাদের এ পথটুকু আসতে হয়েছে। এখন এখানে এসে দেখি কোন পরিবহন নেই। যেতে হবে ট্রাকে করে। আর সেই সুযোগে ভাড়াও অনেক বেশি নিচ্ছে ট্রাক চালকরা। তবুও পেটের দায়ে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে কাজে যেতেই হবে। না গেলে চাকরিটাই থাকবে না আমাদের।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জনস্রোত দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুশফিকুর রহমান বলেন, মনে পবিত্র ঈদের ছুটি কাটানোর পর কর্মস্থলে জনস্রোত। শত শত ট্রাক, পিকআপ আর হাজার হাজার মানুষ। কারো প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কোন ভয় নেই। মহান সৃষ্টিকর্তা কর্মস্থলে ফেরা এসব মানুষসহ বিশ্ববাসীকে মহামারী থেকে নিরাপদ রাখুন।


সর্বশেষ সংবাদ