অনার্সে প্রথম শ্রেণি পেয়েও বেকার ৩৪ শতাংশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:১১ PM , আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:২৬ PM
উচ্চশিক্ষায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি পেয়ে ভালো ফল অর্জনকারীদের মধ্যে ২৮ থেকে সাড়ে ৩৪ শতাংশই বেকার। যাঁরা চাকরি পান তাঁদের ৭৫ শতাংশের বেতন আবার ৪০ হাজার টাকার কম। ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ভালো পল করলেও দেশে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা নেই।
এই হতাশাজনক চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায়। বিআইডিএসের মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদের নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। সেখানে উচ্চশিক্ষিত মেধাবীদের চাকরি, বেতন ও বেকারত্ব নিয়ে এই চিত্র উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষিতদের এক-তৃতীয়াংশই বেকার। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বেকার বেশি। সার্বিকভাবে শিক্ষিতদের মধ্যে ৩৩ শতাংশের অধিক বেকার। আর এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি পাওয়াদের মধ্যে বেকার সাড়ে ১৯ থেকে সাড়ে ৩৪ শতাংশ।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি পাওয়াদের মধ্যে ৩৪ দশমিক চার শতাংশই বেকার। আর স্নাতক পর্যায়ে এমন মেধাবীদের বেকারত্বের হার অন্তত ২৮ শতাংশ। এসএসসিতে জিপিএ–৫ পাওয়াদের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন বেকার বসে আছেন। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে জিপিএ–৫ পাওয়া ৩১ শতাংশের বেশি বেকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এই গবেষণা করা হয়েছে। ছয় লাখ ১৮ হাজার ২৬২ জনকে ফেসবুক ও ই–মেইলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে ১৫ হাজার ২৫ জন উত্তর দিয়েছেন। এর ভিত্তিতেই গবেষণাটি করা হয়েছে। এতে অংশ নেয়া সবাই স্নাতকোত্তর, স্নাতক, উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পাস।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে ন্যূনতম এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজের সুযোগ না পেলে বেকার ধরা হয়। বাংলাদেশে এমন বেকার ২৭ লাখ।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা চাকরির বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এখনো অন্যদের তুলনায় উচ্চশিক্ষিতরা বেশি বেতন পান। তাঁদের মধ্যে বেকারও বেশি। কারিগরি শিক্ষায় অবশ্য কাজের সুযোগ বেশি। বিআইডিএস শ্রমবাজারের যোগ্যতা, দক্ষতা নিয়ে গবেষণা করছে। তখন আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণি পেয়েও চাকরি মেলে না। স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণি পাওয়া চাকরিজীবীদের মধ্যে মাত্র ২৫ দশমিক ৪৯ শতাংশের বেতন ৪০ হাজার টাকার বেশি। এর মধ্যে ১০ শতাংশ মাসে ১০ হাজার টাকাও বেতন পান না। বাকি ৬৫ শতাংশের বেতন ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
এছাড়া স্নাতকোত্তরে দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়েছেন, এমন তরুণ-তরুণীদের দুই-তৃতীয়াংশের বেতন ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। সিজিপিএ সাড়ে তিনের বেশি স্কোর করা ৪৫ শতাংশ ডিগ্রিধারী ৪০ হাজার টাকার বেশি বেতন পান।
স্নাতকে প্রথম শ্রেণি পাওয়া ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ৪০ হাজার টাকার বেশি বেতন পান। আর ৭০ শতাংশের বেতন ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ৫ শতাংশ মাস শেষে ১০ হাজার টাকাও পান না। এছাড়া স্নাতক পর্যায়ে সিজিপিএ সাড়ে ৩ শতাংশ পাওয়াদের ৩৯ শতাংশের বেতন ৪০ হাজার টাকার বেশি।