মেসে এসে টিউশনির টাকা দিয়ে গেলেন ছাত্রীর গোটা পরিবার
শিক্ষাজীবন চালিয়ে নেওয়া কিংবা পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী পড়ান। অনেকটা বাধ্য হয়ে টিউশনি করাতে গিয়ে মিশ্র অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়; যার অধিকাংশই অম্ল, কদাচিৎ মধুর। শিক্ষার্থীর বাসার পরিবেশ, অভিভাবকের আচরণ তো আছেই, এছাড়াও থাকে মাস শেষে সম্মানী বুঝে পাওয়ার বিষয়। এই যেমন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে টিউশনির সম্মানী পাওয়া নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বুকে অবস্থিত কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীর দুশ্চিন্তার কথা আমরা জেনেছি। সম্মানি না পেয়ে মাটির ব্যাংক ভেঙে বাড়ি যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে এবার। আছে এসবের ভিন্ন চিত্রও। গৃহশিক্ষকের সম্মানীর টাকা বুঝিয়ে দিতে তার মেসে গিয়ে হাজির ছাত্রীর গোটা পরিবার। এমনই ঘটনা ঘটেছে ‘আবির আহমেদ নীল’ নামে এক গৃহশিক্ষকের সঙ্গে। ঘটনার আকস্মিকতায় নীল যেনো নীলই হয়ে গেলেন! মধুর সেই আবেগের কথা তিনি শেয়ার করেছেন ফেসবুকে তার নিজ আইডি’তে। সেখান থেকে তার লেখা স্ট্যাটাসটি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো.....
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ছাত্রী ১২ বার ফোন দিছে..।
আমি কল ব্যাক করলাম..ওপাশ থেকে ।
ছাত্রী:স্যার আপনি কোথায় তারাতারি আমাদের বাসায় আসুন..
আমি তারাতারি ফ্রেশ হয়ে সাইকেলটা নিয়ে ছাত্রীর বাসায় রওনা দিলাম..ওদের বাসায় এসে দেখি গেটে তালা লাগা..তখন ছাত্রী কে ফোন দিলাম বাট্ ফোন বন্ধ..মেজাজটায় খারাপ হয়ে গেল...৮ কিলো সাইকেল চালায় আবার মেচে যাইতে লাগবে..কি আর করার ...
কিন্তু মেচে ফিরে এসেই যেটা দেখলাম... আমার ছাত্রীর পুরো পরিবার আমার রুমমেটের সাথে বসে গল্প করতেছে...আমাকে দেখেই আমার ছাত্রী দৌড়ায় এসে বলে আপনার জন্য ১ ঘন্টা ধরে বসে আছি আমরা..ছাত্রীর মা আমাকে হাতে তিনটা ব্যাগ দিয়ে বলল এটা তোমার জন্য বাবা...আর হাতে একটা খাম দিল...আমি বললাম কি এসব,.?
আন্টি:আমাদের তো কোনো ছেলে নাই তুমি আমাদের ছেলের মতো তাই তোমাকে ঈদের শপিং করে দিলাম..
আমিতো মনে মনে অনেক খুশি হলাম...কিছুক্ষণ পর ওরা চলে গেল..আমি খাম খুলে টাকা গুনতে লাগলাম..৮৫০০ টাকা দিছে..আমার বেতন ছিল ৪৫০০ টাকা... আমি অনেক খুশি হলাম এটা ভেবে এবার মা বাবা ভাই বোন সবাইকে ঈদের কাপড় কিনে দিতে পারব...
আরও পড়ুন: টিউশনির টাকা মেলেনি, মাটির ব্যাংক ভেঙে বাড়ি গেল হাশেম!