সমঝোতা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লিগ্যাল নোটিশ দেবে ছাত্রলীগ
আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর থেকেই ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পোস রাজনীতিকে ‘না’ করে ইতোমধ্যেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে ব্র্যাক, ইস্ট-ওয়েস্ট, আইইউবিএটি, এআইইউবিসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা মানতে নারাজ সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
তারা বলছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নতুন কিছু নয়, আগেও ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরব ছাত্র রাজনীতি চর্চায় প্রয়োজনে লিগ্যাল নোটিশের আশ্রয় নেবেন তারা।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটিই জানিয়েছেন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ।
জাহিদ হোসেন পারভেজ বলেন, আমরা চাই একটি সুস্থ ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি। ছাত্রদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে উজ্জীবিত করতে ছাত্রলীগের বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনাগ্রহ জানিয়েছে বলে শুনেছি; তাদের সাথে আমরা কথা বলছি। ইতোমধ্যে আমাদের ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যারয়ের উপাচার্যের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ‘বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কোনো ছাত্র চাইলে সুস্থভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন।’
তবে এর আগে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করার অনুমতি দেবে না বলে জানান ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শাহিদুল হাসান। এক ইমেইলের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি করার কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে আমরা খুবই কঠোর।’
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের রাজনীতির অনুমতি দেবে না ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়
জাহিদ হোসেন বলেন, তরুণরা হারিয়ে যাচ্ছে, অনেকেই নিখোঁজ হয়ে জঙ্গি দলে নাম লেখাচ্ছে। যারা জঙ্গি হচ্ছে তাদের একটা বড় অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে বা পড়তো। হলি আর্টিজেনের মতো ঘটনা যেন আর না হয়, তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি জরুরি। সুস্থ গণতন্ত্র চর্চায় যদি কেউ বাধা দেয় তবে আমরাও জানি কীভাবে অধিকার আদায় করে নিতে হয়। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিগ্যাল নোটিশ যাবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিম বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও কমিটি ছিল। তবে হয়ত সেটা নীরবভাবে। এখন আমরা সরব রাজনীতিতে আসছি। আমরা ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে চাই। এতদিন যখন রাজনীতি নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি ভবিষ্যতের ছাত্রদের পড়াশোনার ক্ষতির কারণ হবে না। আমরা আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করবে। না হলে অধিকার আদায় করে নিতে আমরা জানি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নীতিমালার সাথে বিষয়টি সাংঘর্ষিক কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে আজিজুল হাকিম বলেন, একেবারেই না। বরং ইউজিসি সংগঠন ও গণতন্ত্র চর্চায় উৎসাহিত করে থাকে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ব্র্যাক, নর্থ সাউথ, ইনডিপেনডেন্ট, ইস্ট ওয়েস্টসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণা করে।