সেই নর্থ সাউথ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার প্রমাণ পায়নি কমিটি
বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (খণ্ডকালীন) আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার কোনো প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। এ অভিযোগ মিথ্যা বলে জানিয়েছে কমিটি।
কমিটির একজন সদস্য গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ২২ আগস্ট চিঠি দিয়ে ওই শিক্ষকের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
চলতি বছরের ১১ এপ্রিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি কফিশপে অভিযোগকারী ছাত্রী ও তার সহপাঠীদের হাতে লাঞ্ছিত হন আতিকুর রহমান। পরে যৌন হেনস্তার অভিযোগে তাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। ঘটনার দিনই তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার একদিন পরেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শিক্ষক আতিকুর রহমান জানান, একাডেমিক সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য ওই শিক্ষার্থী তাকে কফিশপে দেখা করতে বলেছিলেন। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই তার ৮-১০ জন বন্ধু অপেক্ষা করছিল। তিনি যাওয়া মাত্রই তার ওপর হামলা চালানো হয়। তাকে মারধর করতে করতে বাইরে টেনে নিয়ে আসা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষক আতিকুর রহমান পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবগত না করার জন্য তাদের এক লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
আরও পড়ুনঃ বাবাকে ‘রেপিস্ট’ বলা সেই ব্র্যাক ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে বান্ধবীর ৯ প্রশ্ন
আতিকুর রহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি গত তিন বছর ধরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত।
তিনি বলেন, “নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। কিন্তু যা সম্মানহানির তা তো হয়েছে। এই ক্ষতির দায় কে নেবে? আমি কীভাবে আমার সম্মান ফিরে পাব?”
তিনি অভিযোগ করেন, “অভিযোগকারী ছাত্রী আমার কাছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্ন চেয়েছিলেন।”
সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর আবু নোমান মারধরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন আতিকুর। ঘটনার পরপরই তিনি ভাটারা থানায় প্রক্টরের বিরুদ্ধে একটি এবং তার ওপর হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন।
মামলা দুটির বিষয়ে ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান মাসুদ জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, তদন্ত ছাড়াই কেন একজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি সামাল দিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপ নেন।”
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলব।”