শিক্ষার্থী ভর্তি: কমিশন বাণিজ্যে এগিয়ে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি

কানাডিয়ান ইউনিভিার্সিটি অব বাংলাদেশ
কানাডিয়ান ইউনিভিার্সিটি অব বাংলাদেশ  © ফাইল ছবি

দেশে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে কমিশন বাণিজ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। একজন শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে দিলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ৭ হাজার টাকা উৎকোচ দেয়। এই ধরনের কমিশন বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

ইউজিসি বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে ‍দিলে কমিশন দেওয়ার কোনো বিধান নেই। কমিশনের অর্থ শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি থেকেই দেওয়া হয়। এতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীকে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে ইউজিসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পর্যায়ে যেকোন বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে শিক্ষার্থী প্রতি ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। আর ডিপ্লোমা করা শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারলে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এজন্য যে ব্যক্তি শিক্ষার্থী নিয়ে আসে তাকে কিছু ‘ফরমালিটিস’ পূরণ করতে হয়। এটি একবারই করতে হয়।

এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ভর্তি অফিসে যোগাযোগ করে। ভর্তি অফিস থেকে জানানো হয়, জেনারেল শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৭ হাজার আর ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ভর্তি করালে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে এই অর্থ নগদ পরিশোধ করবেন তারা। এজন্য কিছু ফরমালিটিসি পূরণ করতে হবে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে এই ফরমালিটিস আর পূরণ করতে হবে না।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী ভর্তি করালে উৎকোচ দেয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

তবে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কমিশন বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করেছেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ এস এম জি ফারুক। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে কমিশন দেওয়া হয় এ ধরনের বিষয় আমার জানা নেই। এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।

শিক্ষার্থী ভর্তি করালে ৭ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি আমাদের পরিচালকের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাব।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আইনে কোথাও বলা নেই যে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে কমিশন দেওয়া হবে। যে অর্থ দেওয়া হচ্ছে সেটি ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর ফি থেকে দেওয়া হচ্ছে। এতে ওই শিক্ষার্থীর ওপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান খারাপ হলে সেখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে চায় না। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী ভর্তি করালে এমন উৎকোচ দিচ্ছে তাদের শিক্ষার মান নিয়েই আমার প্রশ্ন আছে। আমাদের কাছে সুর্নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সহ কেউ অভিযোগ দিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ