সনদের বৈধতা নেই ৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের
বেসরকারি তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। শিগগিরই এই বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেবে সংস্থাটি। ইউজিসি বলছে, ওই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনানুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি হলো ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা।
ইউজিসি সূত্র জানা গেছে, এরই মধ্যে এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে গণবিজ্ঞপ্তির খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন তা প্রকাশ করা হবে।
খসড়ায় ইবাইস ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিওটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা নেই। চ্যান্সেলর নিযুক্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির কোনো পদেই আইনানুগভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। এককথায় বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। সব শিক্ষাক্রম মেয়াদোত্তীর্ণ। আইনানুযায়ী সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল নেই। এসব কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক কার্যক্রমসহ ভর্তি, পরীক্ষা ও এর ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
অন্যদিকে, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে সনদ বিক্রি, আর্থিক অনিয়ম, অবৈধ ক্যাম্পাসের তালিকা তৈরি করেছে ইউজিসি। এতে বলা হয়, ২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর একবার এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে মামলায় ২০১৩ সালে সংশ্লিষ্টরা রায় পায়। এর অনুমোদনকালীন ঠিকানা বনানী হলেও পরে প্রগতি সরণির রোডের নর্দায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু চার সদস্যের কমিটি অনুমোদিত ঠিকানা পরিদর্শনে গিয়ে আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মতো সুযোগ-সুবিধা পায়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়েও রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত উপাচার্যসহ কোনো জনবল পাওয়া যায়নি। নেই বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাক্রমের মেয়াদও উত্তীর্ণ। প্রতিষ্ঠানটির সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিলসহ একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং ভর্তি পরীক্ষা ও সনদের আইনগত বৈধতা নেই।
এছাড়া, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদন পেলেও নানা অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের অক্টোবরে সরকার বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাসের যে ঠিকানা ছিল বর্তমানে সেখানে তাদের কোনো অস্থিত পাওয়া যায়নি। আদালতে রিট করে প্রতিষ্ঠানটি চালানোর সাময়িক অনুমোদন নেওয়া হলেও সেখানে ঠিকানা পরিবর্তন করার বিষয়টি উল্লেখ নেই। অথচ তারা ঠিকানা পরিবর্তন করে শিক্ষক-কর্মকর্তা ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করে সনদ বিক্রি করছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এসব অভিযোগের কারণে উল্লিখিত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।