বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের সতর্ক করলেন রাষ্ট্রপতি
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের সতর্ক করেছেন রাষ্ট্রপতি ও দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য মো. আবদুল হামিদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রবিবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটন ঢাকায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন রাষ্ট্রপ্রধান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ আর অন্যান্য বাণিজ্যিক খাতের বিনিয়োগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক হতে পারে না। এটা পরিষ্কারভাবে মনে রাখতে হবে। ইদানীং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিছু সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে নেতিবাচক খবর বেরিয়েছে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিনিয়োগকে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন: স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি ২৭ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
তিনি বলেন, নিয়ম-নীতি, অবকাঠামো ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করে বছর বছর ছাত্র ভর্তি করছে আর সার্টিফিকেট বিতরণ করছে। শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের জন্য কতটুকু যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে পারছে সেদিকে খেয়াল রাখার কোনো দায়িত্বই যেন তাদের নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের সমালোচনা করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে কর্তৃপক্ষ মনে করেন এটা তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। শিক্ষায় কর্পোরেট কালচার প্রতিষ্ঠাকেই তারা বেশি গুরুত্ব দেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও অনুশীলনের স্থান। আমি আশা করি, আপনারা এক্ষেত্রে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করবেন।
বঙ্গবন্ধু মুক্তমনা ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে এটাই তিনি চাইতেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাতে স্বাধীনভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারে আপনাদেরকে তা নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনৈতিক দর্শন, মানবতাবোধ, চিন্তা-চেতনা ও নীতি-নৈতিকতাকে শিক্ষাব্যবস্থার সব পর্যায়ে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এমন শিক্ষার্থী দেখতে চাই, যারা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে সমাজকে মূল্যবান কিছু দান করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকেও গবেষণার কাজে আরও আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। অধ্যাপনা বিষয়ে অন্যান্য দেশে কী কী কাজ হচ্ছে তা জানার জন্য শিক্ষকদের যথেষ্ট আগ্রহ ও উদ্যম থাকতে হবে।