গবি ক্যাম্পাসে শীতের ছোঁয়া
সারি সারি বাদাম গাছের নিচটা হলুদ পাতায় ভরে গেছে। ঝরে পড়া এসব পাতার উপর জমেছে কুয়াশার ঘন আস্তরণ। ঈশান কোণে সূর্যটা কেবল মাত্র রক্তিম হয়ে উঠেছে, সেই মুহূর্তে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্য সচেতন কিছু মানুষ দৌড়ঝাপের মাধ্যমে গাঁ গরম করে নিচ্ছেন।
তারপর ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে আটটা বাজতেই ক্যাম্পাসে সরগরম শুরু হতে লাগল। শুকনো ঝরা পাতাগুলো মাড়িয়ে যেতেই তৈরী হয় মর্মর শব্দের ধ্বনি। প্রকৃতি যেন সবার পায়ের নিচে নূপুর পড়িয়ে রেখেছে। এতক্ষণে বোঝার আর বাকি নেই শীত এসে গেছে। ঋতু পরিবর্তনের খেলায় এবার এলো শুষ্ক-রুক্ষ, হিমশীতল শীত। প্রতিটা ঋতুই প্রকৃতিকে সাজিয়ে দেয় তার আপন মহিমায় ৷
সবুজের সমারোহ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ও শীতের সাজে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে। তবে, শীতের তীব্রতা ক্যাম্পাসে জেঁকে বসলেও শীত নয় যেন পরীক্ষা কাঁপাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মহামারী করোনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দীর্ঘ আঠারো মাস পর ক্যাম্পাস খুললেও পরীক্ষা আর ক্লাসের ব্যস্ততায় ডুবে যেতে হয়েছে প্রতিটা শিক্ষার্থীকে।
কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়া শীত শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা যেন মুড়ে আছে পরীক্ষার চাদরে। বেশিরভাগ বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিডটার্ম শেষ করতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে ডিসেম্বর এর ১৮ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে সেমিষ্টার ফাইনাল। আর এই সমাপনী পরীক্ষাকে ঘিরে এখন থেকেই তৈরী হয়েছে প্রাক্টিকেল, প্রেজেন্টেশন, এসাইনমেন্ট এবং মিডটার্মের ব্যাপক তোড়জোড়।
সকাল হওয়ার আগেই ক্যাম্পাসের আশ-পাশের হোস্টেল, মেসগুলো থেকে শুনা যায় পড়ার শব্দ। এ যেন, ঠোঁট ফেটে যাওয়া শীতে গলা ফাটছে শিক্ষার্থীদের। গাছের পাতা থেকে গড়িয়ে পড়া কুয়াশার টুপটাপ ধ্বনি মিলিয়ে যায় পড়ার গুনগুন শব্দে।
ধোঁয়া উঠা চায়ের কাপে ঘুমহীন ব্যবহারিক লেখার রাত আর গরম কাপড় পড়ে ভুলে থাকা শীতের শরীরে অনুভত হয় পরীক্ষার উঞ্চতা। সব মিলিয়ে এটা বলাই যায় শীতের ক্যাম্পাস কাঁপাচ্ছে পরীক্ষা।