দৌরাত্ম্য কমেনি ভুয়া স্টাডি সেন্টারের, টাকা দিলেই মিলছে পিএইচডি সনদও
নাম আছে কিন্তু নেই কোনো ক্যাম্পাস। তবুও চলছে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি ভর্তি। লাখ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সার্টিফিকেট। এভাবেই রাজধানীতে বসে উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে কনসালটেন্সির নামে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
রাজধানীর মালিবাগে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিইউডি) প্রধান কার্যকালয়ের পাশে শাহজালাল টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় অফিস খুলে কার্যক্রম চালাচ্ছে ‘লিংকনস হায়ার এডুকেশন মেনেজমেন্ট (এলএইচইএম) নামের এক ভুয়া কনসালটেন্সি এজেন্সি।
এজেন্সিটি ‘আমেরিকান ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএ’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির করিয়ে দিতে অনার্সের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৫ হাজার ১০০ ডলার এবং মাস্টার্স ও পিএইচডি ভর্তির জন্য নিচ্ছে ১০ হাজার ৬০০ ডলার।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি একটি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তারা। যেখানে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডিসহ বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নজরে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশিনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে পরিদর্শনে যায় ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলটির কাছে ধরা পরে ভয়াবহ শিক্ষা বাণিজ্যের চিত্র।
ইউজিসি জানিয়েছে, এলএইচইম নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি aiuedu.org নামের যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে সেটি ২০১৪ সালে নঁওগা জেলা থেকে চালু করা হয়েছে। ওয়েবসাইটের ফিচার ইমেজে যে ফটো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। ‘আমেরিকান ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি’ নামে ক্যালিফোর্নিয়ায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই।
বিষয়টি আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে ইউজিসির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুককে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্যরা হচ্ছেন, কমিশনের উপ-পরিচালন আবদুল মান্নান, সিনিয়র সহকারী পরিচালক গোলাম দস্তগীর এবং সহকারী পরিচালন শরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী অনুমোদনহীন বিদেশে ভর্তি এজেন্সি করা সম্পূর্ণ বে-আইনী। ক্যাম্পাস নেই কিন্তু ভর্তি জন্য কনসালটেন্সির কাজ আরও মারাত্মক অপরাধ। আমরা এমন ভুয়া স্টাডি সেন্টরের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।