নর্থ সাউথের ২৮ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব চায় মন্ত্রণালয়
দীর্ঘদিন ধরে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। যার কারণে ম্লান হতে বসেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অর্জন। তাই এবার এনএসইউর আর্থিকসহ সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির দীর্ঘ ২৮ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব পুনর্নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ-বিষয়ক একটি চিঠি এনএসইউ ট্রাস্টি বোর্ডকে (বিওটি) পাঠানো হয়েছে। এনএসইউর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে এ চিঠি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, এনএসইউর প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিরীক্ষিত হিসাব মন্ত্রণালয়ের মনোনীত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুনর্নিরীক্ষা করাতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দ্য নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টের মাধ্যমে। ট্রাস্ট গঠন-সংক্রান্ত দলিলের শুরুতেই বলা হয়েছে, এ ট্রাস্ট মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হবে। অথচ নর্থ সাউথ ট্রাস্টি সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে মোটা অংকের অর্থ ব্যয়ে নিজেদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন। বিওটিসহ নিজেদের তৈরি করা বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কমিটির সভা ডেকে বড় অংকের সিটিং অ্যালাউন্স নেন ট্রাস্টিরা।
সভাভেদে সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ একেকজন সদস্য নিচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির অপ্রয়োজনীয় ১৯টি কমিটি বাতিলের বিষয়ে মতামত জানাতে ইউজিসিকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসি তদন্ত করে অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় এনএসইউর ১৫টি কমিটি বাতিলের সুপারিশ করে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়কে।
দলিলে আরও বলা হয়েছে, যদিও সুপারিশ প্রতিবেদন পাঠানোর কয়েক বছরেও বাতিল করা হয়নি কমিটিগুলো। এসব কমিটি কোন প্রক্রিয়ায় এবং কোন আইনি বলে গঠিত, সর্বশেষ দেয়া চিঠিতে সে বিষয়েও ব্যাখ্যা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও কেনাকাটা কিংবা সেবার নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এনএসইউর কয়েকজন ট্রাস্টির বিরুদ্ধে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার আলোকে এনএসইউর বিষয়ে ইউজিসিকে দিয়ে একটি তদন্ত করানো হয়। সে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রণালয়ের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ ও মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে এনএসইউকে বেশকিছু বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।