বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জিপিএর ভিত্তিতে
এবার ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই জিপিএর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে ভর্তি হওয়ো পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এরইমধ্যে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এবার কয়েকটি গুচ্ছ ছাড়াও আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। করোনার কারণে ভর্তির শর্তেও পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া ভর্তির তোড়জোড় শুরু হেয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও।
ইউজিসি সূত্র জানায়, পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে জিপিএর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম জিপিএ–থাকতে হবে ২.৫০। করোনার কারণে এবার অনুষ্ঠিত হয়নি এইচএসসি পরীক্ষা। জেএসসি ও এসএসসি ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাসের ফল দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই। অনেকে অনুমোদন ছাড়াই বিভাগ চালাচ্ছে। নির্ধারিত আসনের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ রয়েছে। তাই এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
দেশে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১০৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে ৯৩টির। আসন সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছরই বিপুল সংখ্যক আসন খালি থাকে। করোনার কারণে এবার সে সংখ্যা বাড়বে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আগেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে শিক্ষার্থীদের যাচাই বাছাই করার আহবান জানিয়েছে ইউজিসি। এছাড়াও যেসব বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযানে নামছে বলে জানা গেছে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ৯৮টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরমধ্যে ২৭টি বিশ্ববিদ্যালয় নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে আরও যাচাই বাচাই করে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এছাড়াও অভিযুক্ত ২৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আরও কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত ক্যাম্পাস, প্রোগ্রাম, আসন ও সেমিস্টার চালাচ্ছে কি না, তা জানতে মাঠে নেমেছে ইউজিসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়েছে ইউজিসি।
এতে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিশন অনুমোদিত প্রোগ্রাম, অননুমোদিত আসন সংখ্যা ও প্রতিটি প্রোগ্রামের বিদ্যমান সকল শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তথ্য আগামী সাত কর্মদিসের মধ্যে পাঠাতে হবে। ওই ২৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ায় সর্তকতা জারি করেছে ইউজিসি।
গণবিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি বলেছে, সংশ্লিষ্ট সবাইকে কমিশনের ওয়েবসাইট (www.ugc.gov.bd) দেখে অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং অনুমোদিত প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো।