১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:৩৯

আইআইইউসির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম   © ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ওয়েবমেট্রিক র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২৫তম স্থান অর্জন করেছে। ইউজিসির তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯ম স্থানে ও চট্টগ্রামে প্রথম স্থানে অবস্থান করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। জ্ঞানের সঙ্গে নৈতিকতার সমন্বয় এবং ধর্ম ও বিজ্ঞানের আলোকে আদর্শ নাগরিক গড়ে তোলায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পছন্দের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইআইইউসি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ট্রাস্ট (আইইউসি)-এর তত্ত্বাবধানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের আওতায় অনুমোদন লাভ করে। সেই বছর থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাসহ মোট তিনটি ক্যাম্পাস ছিলো। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনায় ২০১৬ সালে সকল ক্যাম্পাস গুটিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে সীতাকুন্ড উপজেলার কুমিরাতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে অন্যান্য ক্যাম্পাসের কার্যক্রম শুরু করে।

৪৩ একরের বিশাল এলাকায় তিনটি আবাসিক হল, তিনটি একাডেমিক ভবন, পাঁচটি অনুষদ ভবন, একটি লাইব্রেরী ভবন, সেন্ট্রাল মসজিদ ও অডিটরিয়াম/লেকচার থিয়েটার নিয়ে চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কার্যক্রম। এখানে লেখাপড়া করছেন ১১ হাজার ৭৮৬ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, চীন, সোমালিয়া, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া ও সুদানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এখানে লেখাপড়া করছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অমুসলিম ছাত্রছাত্রীও।

বিশ্ববিদ্যালয়টি আজকেরই এইদিনে যাত্রা শুরু করে। তবে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই খুব ভালোভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা ডাটাবেজ ‘স্কোপাসের’ র‌্যাঙ্কিং। সেখানে স্থান পেয়েছেন আইআইইউসির গবেষকরা। প্রতিবছর গবেষণা তালিকা ও গবেষকদের অবস্থান প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডাটাবেজ স্কোপাস। এ তালিকায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মধ্যে সর্বাধিক প্রবন্ধ প্রাকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয় ১৩৮টি প্রকাশনা। আইআইইউসির গবেষকদের মধ্যে সর্বাধিক প্রকাশনা রয়েছে ফার্মাসি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আরিফুল হক এবং সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আকতার সাঈদের। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ফার্মাসী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এস এম আলী রেজা, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন। 

এছাড়া চতুর্থ অবস্থানে ফার্মেসী  বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম, সর্বশেষ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সিকদার সাবনিম ইসলাম। এমনই অর্জনের সূতিকাগার বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ ১১ ফেব্রুয়ারী ২৬ বছর অতিবাহিত করলো। তবে এ দিনটিতেই বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাস। ছিলো না কোন উৎসব, কোন কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ বছর পূর্তি। ভেবেছিলাম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণিল সাঁজে সাঁজবে। মেলে ধরবে তার ভরা যৈাবন। নবীন-প্রবীনদের মিলোনমেলা বসবে। কিন্ত করোনাভাইরাসের জন্য আজ আমার বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিরহে পরিনত হয়েছে। তার মধ্যে যেন নেই কোন সুখ। সবাই যেন তাকে একা ফেলে চলে গেছে। তবে আমি চাই, দ্রুত দেশের করোনাভাইরাস দূর হয়ে ফিরে আসুক তার স্বাভাবিক রুপে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় মেলে ধরুক তার ভরা যৌবন।’